কাজের চাপ ও পরিবারের দায়িত্বের বোঝা থেকে মুক্তি পেতে চীনের তরুণদের মধ্যে বিয়ে বা বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরিতে অনীহা তৈরি হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অর্থের বিনিময়ে ‘ভালোবাসা’ কেনার প্রবণতা বাড়ছে।
এমন বাস্তবতায় চীনের কিছু তরুণী দৈহিক সম্পর্ক ছাড়া আলিঙ্গন, চুমু ও সঙ্গ দেওয়ার মতো বিষয়গুলো বিক্রিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। খুব সহজে ও স্বল্প মূল্যে কেনা যাচ্ছে এই ‘ভালোবাসা’।
গত বছরের এপ্রিলে চীনের সাপ্তাহিক সংবাদপত্র সাউদার্ন উইকলি প্রথম ‘স্ট্রিট গার্লফ্রেন্ড’ (রাস্তার বান্ধবী) বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যা চীনজুড়ে আলোড়ন তোলে। তবে সে সময় অনলাইনে প্রতিবেদনটি খুব বেশি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা। এসব ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়ে তরুণীরা আলিঙ্গন, চুমু ও সঙ্গ বিক্রি করছেন।
শেনঝেনের সাবওয়ে স্টেশনের পাশে এমন একটি ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়েছেন এক তরুণী। তাঁর সামনে রাখা সাইনবোর্ডে লেখা—একটি আলিঙ্গন ১ ইউয়ান (১৪ মার্কিন সেন্ট), একটি চুমু ১০ ইউয়ান এবং একসঙ্গে সিনেমা দেখার জন্য ১৫ ইউয়ান।
অন্য একটি সড়কে এ ধরনের আরও দুটি ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়েছেন দুই নারী। তাঁদের সাইনবোর্ডে লেখা—ঘরের কাজে সাহায্যের জন্য ২০ ইউয়ান (২ ডলার ৮ সেন্ট), পান করা সময় সঙ্গ দেওয়ার জন্য ৪০ ইউয়ান।
স্থানীয় গণমাধ্যমের দেওয়া তথ্য বলছে, এই তরুণীদের অনেকেই একজন গ্রাহকের সঙ্গে সময় কাটিয়ে ১০০ ইউয়ান পর্যন্ত উপার্জন করতে পারেন। স্ট্রিট গাল৴ফ্রেন্ড নিয়ে গণমাধ্যমগুলোয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
আইনি প্রতিষ্ঠান সিচুয়ান হংকিয়ের আইনজীবী হি বু সংবাদমাধ্যম দ্য পোস্টকে বলেন, স্ট্রিট গার্লফ্রেন্ড পরিষেবাটি বর্তমানে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর বাইরে পরিচালিত হচ্ছে। ফলে পতিতাবৃত্তির ঝুঁকি বাড়ছে।
সামাজিক ও মানসিক চাহিদা মেটাতে তরুণ-তরুণীরা স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর উপায় বেছে নিতে পারেন। আর এ জন্য সমাজের সব স্তরের মানুষ তরুণদের সঠিক পথ দেখাতে পারেন।
গত জানুয়ারিতে চীনের একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, একটি পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়ে ‘এক দিনের প্রেমিক’ নামে পরিষেবা দিচ্ছেন এক নারী। তাঁর দোকানের সাইনবোর্ডে লেখা, ‘এক দিনের প্রেমিকা, এক দিনের জন্য ৬০০ ইউয়ান (৮৪ ডলার)। উষ্ণ যত্ম, খাবার, আলিঙ্গন ও চুমু দিতে পারি, তবে দৈহিক সম্পর্ক নয়।’