চীনে আইফোন কারখানায় উৎপাদন কমতে পারে ৩০ শতাংশ

কারখানাটি মধ্যচীনের ঝেংঝাউয়ে অবস্থিত। এখানে দুই লাখ কর্মী কর্মরত
ছবি: রয়টার্স

চীনের একটি কারখানায় চলতি মাসে অ্যাপলের আইফোন উৎপাদন ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। করোনা বিধিনিষেধ পালনে কড়াকড়ি আরোপের ফলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এই কারখানায় আইফোন উৎপাদনে এই প্রভাব পড়তে যাচ্ছে। বিষয়টির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত একজন গত সোমবার রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন।
ফক্সকন নামের এই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কাগজে-কলমে হোন হাই প্রিসিশন ইন্ডাস্ট্রি কো. লিমিটেড হিসেবে পরিচিত। তথ্যটি গোপনীয় হওয়ায় নাম না প্রকাশ করার শর্তে ওই ব্যক্তি বলেন, ঘাটতি মেটাতে তাঁরা শেনঝেন শহরের আরেকটি কারখানায় উৎপাদন বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছেন।

মূল কারখানাটি মধ্যচীনের ঝেংঝাউয়ে অবস্থিত। এখানে দুই লাখ কর্মী কর্মরত। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ নিয়ে মতবিরোধের জেরে এই কারখানায় ব্যাপক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। গত সপ্তাহের শেষ দিকে কয়েকজন কর্মী কারখানা থেকে পালিয়ে যান।

এমন সময় উৎপাদনে এ প্রভাব পড়তে যাচ্ছে, যখন সাধারণত বছর শেষে ছুটির মৌসুমে ইলেকট্রিক পণ্য উৎপাদনকারীরা ব্যস্ত সময় কাটান। অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠানের জন্যও এটা সবচেয়ে কাটতি সময়।

গত রোববার ফক্সকন বলেছে, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসছে। সম্ভাব্য যেকোনো ধরনের প্রভাব মোকাবিলায় তারা অন্য কারখানাগুলোর সঙ্গে বিকল্প উৎপাদনে যাওয়ার বিষয়টি সমন্বয় করবে। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাপল কোনো মন্তব্য করেনি।
ফক্সকন অ্যাপলের সবচেয়ে বৃহৎ আইফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। আইফোনের বৈশ্বিক সরবরাহের ৭০ শতাংশই তারা উৎপাদন করে। এই খাত থেকেই তাইওয়ানিজ প্রতিষ্ঠানটির ৪৫ শতাংশ আয় আসে বলে তাইপেইভিত্তিক ফুবন রিসার্চ গত মাসে জানিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি ভারতেও আইফোনের যন্ত্রাংশ তৈরি করে থাকে। তবে বৈশ্বিক সরবরাহের অধিকাংশই ঝেংঝাউ কারখানায় প্রস্তুত করা হয়।

অবশ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাশোনা আছে দ্বিতীয় এমন এক ব্যক্তি জানান, অনেক কর্মীই ঝেংঝাউয়ের কারখানায় রয়ে গেছেন। উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে।

চীনের অত্যন্ত কঠোর ‘জিরো কোভিড নীতির’ কারণে স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হয়। এসব ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে পুরোপুরি লকডাউন আরোপ করা। আক্রান্ত এলাকায় কঠোর শর্ত মেনে কারখানা খোলার অনুমতি দেওয়া হয়ে থাকে।

ফক্সকন ১৯ অক্টোবর ঝেংঝাউ কারখানার ক্যানটিনে খাবার পরিবেশন বন্ধ করে দেয়। এতে কর্মীদের নিজেদের আবাসিক কক্ষে খাবার খেতে হয়। কর্তৃপক্ষের এমন পদক্ষেপে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করেন কর্মীরা। তবে উৎপাদন স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।