চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বলেছেন, এশিয়ার দেশগুলোকে অবশ্যই ‘বিশৃঙ্খলা ও সংঘাত’ এড়িয়ে চলতে হবে। না হলে এই অঞ্চলে ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আজ বৃহস্পতিবার চীনের হাইনান দ্বীপে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার বার্ষিক সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে চীনা প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনিশ্চিত এই বিশ্বে, চীন যে নিশ্চয়তা দিচ্ছে, তা বিশ্বের শান্তি ও উন্নতিতে ভূমিকা রাখছে। এটা অতীতে ছিল, বর্তমানেও আছে।
সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক, ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এইচএসবিসির প্রধান নির্বাহী নোয়েল কুইন, আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকস্টোনের প্রতিষ্ঠাতা স্টিফেন সোয়ার্জম্যান প্রমুখ। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। এ ছাড়া সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। আগামী জুলাইয়ে তাঁর ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা রয়েছে।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রায় তিন বছর ‘শূন্য করোনা নীতি’ মেনে চলেছিল বেইজিং। এতে দেশটির অর্থনীতির ওপর আঘাত আসে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসেও চীনে অর্থনীতি দুর্বল ছিল বলে পরিসংখ্যানে দেখা গেছে। লি কিয়াং বলেন, শূন্য করোনা নীতি প্রত্যাহারের পর চীন আবার নিজেদের অর্থনীতিকে দাঁড় করানোর পথে রয়েছে।
সম্মেলনে চীনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থিতিশীলতা বজায় রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবে চীন। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতিকে আরও জোরদার করা হবে। একই সঙ্গে দেশটির অর্থনীতির চলমান সামগ্রিক উন্নতির প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া হবে।
২০২২ সালে চীনের অর্থনীতি মাত্র ৩ শতাংশ বাড়ে। ২০২০ সাল ছাড়া বিগত কয়েক দশকের মধ্যে এটি ছিল দেশটির অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে কম অগ্রগতির বছর। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে বড় ধাক্কা খায় চীনের ব্যবসা–বাণিজ্য ও পর্যটন।
সম্মেলনে চীনের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন লি কিয়াং। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, এরপরও দেশটির অর্থনীতি নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস, চীনের জন্মহারে নিম্নগতি, আবাসন–সংকট ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সৃষ্টি করা নানা প্রতিবন্ধকতা।
ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের গবেষক নিক ম্যারোর ভাষ্যমতে, এসব বাধার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন চীনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।