চীনের একটি সমাধিস্থলে খননকাজ চলছিল। এ সময় ৩ হাজার ৬০০ বছরের পুরোনো একটি কফিন পাওয়া যায়। খোলার পর দেখা যায়, এক তরুণীর মমি করা মরদেহ আছে সেটিতে। তাঁর গলাজুড়ে লেগে ছিল একধরনের পদার্থ। কী সেসব, ভাবনায় পড়ে যান বিজ্ঞানীরা। চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। কী ছিল, শেষ পর্যন্ত তা জানা গেল ২১ বছর পর।
২০০৩ সালে চীনের জিনজিয়াংয়ের জিয়াওহে সমাধিতে ওই খননকাজ চালানো হয়েছিল। মমির গলার কাছে পাওয়া পদার্থগুলোগুলো তখন গয়না ভেবেছিলেন বিজ্ঞানীরা। তবে নমুনা পরীক্ষার পর সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ওগুলো গয়না ছিল না, ছিল বহু পুরোনো পনির।
বেইজিংয়ে অবস্থিত চায়নিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক কিয়াওমেই ফু এনবিসি নিউজকে বলেন, সাধারণত পনির নরম হয়। এটা তেমন নয়। এটা একেবারে শুকনো, ঘন এবং শক্ত অবশিষ্টাংশে পরিণত হয়েছে।
কিয়াওমেই বলেন, জিয়াওহে সমাধিক্ষেত্রের তিনটি সমাধি থেকে তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। হাজারো বছর ধরে ব্যাকটেরিয়ার বিবর্তন কীভাবে হচ্ছে, তা শনাক্ত করার জন্য নমুনাগুলো নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন তাঁরা।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, কেফির দানা ব্যবহার করে গাঁজন করা দুধ থেকে ওই পনির তৈরি করা হয়েছিল। এটি তৈরিতে গরু ও ছাগলের দুধ ব্যবহারেরও প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গবেষক দল বলছে, ব্রোঞ্জ যুগের মানুষেরা কীভাবে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করত, কেফির পনির ব্যবহার করার প্রবণতা থেকে সে ধারণা পাওয়া যায়। পাস্তুরিতকরণ ও রেফ্রিজারেটরের ব্যবহার শুরুর আগে জিয়াওহের মানুষেরা কীভাবে দুগ্ধজাত খাবার খেতে, সেটিরও ইঙ্গিত পাওয়া যায় এটি থেকে। জিয়াওহের বাসিন্দারা জিনগতভাবেই দুগ্ধজাত খাবার সহ্য করতে পারে না বলে মনে করা হয়ে থাকে।
এনবিসির পক্ষ থেকে গবেষক ফুর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে ওই পনির খাওয়ার উপযোগী কি না কিংবা তিনি এটা চেখে দেখেছেন কি না।
ফু বলেছেন, এমনটা করার কোনো সুযোগ নেই।