৯০ দিন হয়ে গেছে। চীনা কোস্টগার্ডের হাতে আটক হওয়া হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী ১২ কর্মীর এখনো কোনো খোঁজ পাননি তাঁদের স্বজনেরা। প্রিয় মানুষটির খোঁজে আর কোনো উপায় না পেয়ে বেলুনে বার্তা লিখে উড়িয়েছেন তাঁদের স্বজনেরা। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার হংকংয়ে নিজেদের সীমান্তে বেলুন ওড়ান তাঁরা।
গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে ওই ১২ জন নৌকায় করে তাইওয়ানে যাওয়ার পথে আটক হন। গত বছর হংকংয়ে গণতন্ত্রকামী আন্দোলনে ‘সহিংসতা’র অভিযোগে তাঁদের বেশির ভাগেরই বিচার হয়েছে। চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শেনঝেনের জলসীমায় আটক হন তাঁরা।
চীনের নতুন নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে হংকংয়ে গত বছর থেকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করছেন গণতন্ত্রপন্থীরা। কর্তৃপক্ষ ওই বিক্ষোভকে দেখছে হংকংবিরোধী অপরাধ হিসেবে।
আটক হওয়ার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা হংকংয়ের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কেট ওর একটি ছোট পাহাড়ে চড়ে বেলুন উড়ান। এলাকাটি শেনঝেনের ইয়ানতিন পোতাশ্রয়ের কাছাকাছি।
আটক ওং ওয়াই-ইনের মা এএফপিকে বলেন, ‘এখানে আসার পর আমার মনে হচ্ছে, আমি ওর খুব কাছাকাছি আছি। ও এত কাছে থাকার পরও অনেক দূরে ও।’
সেখানে জড়ো হওয়া স্বজনেরা ও সমর্থকেরা ‘সেইভ ১২’ লেখা ব্যানার নিয়ে আসেন।
বেলুনে প্রিয়জনের নাম ও বার্তা লেখা ছিল। একটি বেলুনে লেখা ছিল, ‘তোমার শূন্যতা অনুভব করছি। তাড়াতাড়ি ফিরে এসো।’
আটক হওয়া চেং টেসজ-হোর বাবা এএফপিকে বলেন, ‘এর আগে তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওর চিঠি পাওয়ার পর আমি ও আমার স্ত্রী অনেক কেঁদেছি।’ তিনি বলেন, ‘ওদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগই থাকুক না কেন, ওরা হৃদয় দিয়ে হংকংকে ভালোবাসে। আমি আশা করছি চীন যত দ্রুত সম্ভব ওদের হংকংয়ে ফিরিয়ে দেবে।’
আটক হওয়ার পর সম্প্রতি প্রথমবারের মতো তাঁদের কাছ থেকে হাতে লেখা চিঠি পান স্বজনেরা। পরিবারের পক্ষ থেকে নিয়োগ করা আইনজীবীদের আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি চীন সরকার। পরে চীন সরকার নিজেই আইনজীবী নিয়োগ দেয়। এই আইনজীবীরাই স্বজনদের কাছে চিঠি পৌঁছে দেন।
আটক ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা এক বিবৃতিতে বলেন, ওই চিঠিতে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তাঁরা। চিঠিটি সম্ভবত জোর করে লেখানো হয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।