চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, কয়েকটি দেশের একতরফা নিষেধাজ্ঞা, রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি কুক্ষিগত করার প্রচেষ্টার বিরোধিতা করা উচিত বিশ্বের। খবর সিনহুয়ার ও আল-জাজিরার।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে সি বলেন, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার অপপ্রয়োগ স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতা। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রিকস সম্মেলনের প্রথম দিন ভার্চ্যুয়াল ভাষণে সি এ কথা বলেন।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার অর্থনৈতিক জোট সংক্ষেপে ব্রিকস নামে পরিচিত।
দুই দিনের এ সম্মেলনে বিগত দুই বছরের মতো ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য রাখবেন ব্রিকস নেতারা। এ সম্মেলনের নির্দিষ্ট কোনো অ্যাজেন্ডা নেই। তবে আলোচনায় ইউক্রেন সংকটই গুরুত্ব পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনা প্রেসিডেন্ট সির এ বক্তব্য কার্যত ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের প্রকাশ্য সমালোচনা। তাঁর বক্তব্যে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার প্রতি মৌন সমর্থন এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিপরীতে নতুন আন্তর্জাতিক জোট গঠনের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পেয়েছে।
সিকে উদ্ধৃত করে সিনহুয়া বলেছে, দেশগুলোর উচিত স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতা প্রত্যাখ্যান করা। সংঘাত বন্ধ করা, একপক্ষীয় নিষেধাজ্ঞা ও নিষেধাজ্ঞার অপপ্রয়োগের বিরোধিতা করা। একই সঙ্গে মানবতার জন্য অংশগ্রহণমূলক ভবিষ্যতে বিশ্বাসী একটি বড় জোট গঠনের মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদকে ঘিরে তৈরি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর বিরোধিতা করা।
চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান বাজার ও প্রধান প্রধান উন্নয়নশীল দেশের প্রতিনিধি হিসেবে ঐতিহাসিক পরিবর্তনের এ সন্ধিক্ষণে বিশ্বের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত ও দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’
সি আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফল বুমেরাংয়ের মতো হতে পারে। এটি দ্বিধারী তলোয়ারের মতো। বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবণতা ও আর্থিক প্রবাহকে রাজনীতিকরণ, কৌশল ও অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করলে বিশ্ববাসী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সম্মেলনে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের জন্য ‘নির্দিষ্ট কিছু দেশের কাণ্ডজ্ঞানহীন ও স্বার্থপর পদক্ষেপকে’ দায়ী করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
নির্মোহ ও পারস্পরিক লাভজনক সহযোগিতাই এ সংকট থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পুতিন আরও বলেন, ব্রিকসের সদস্যদেশগুলো পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল এবং আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের মাধ্যমে ‘একটি সত্যিকার বহুপক্ষীয় বিশ্বব্যবস্থার’ জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এতে ধীরে ধীরে ব্রিকসের বৈশ্বিক প্রভাব বাড়ছে।