চীন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তাইওয়ানের স্বাধীনতা খোঁজার প্রচেষ্টার অর্থ যুদ্ধ। তাইওয়ানের কাছে চীনের সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড ও যুদ্ধবিমানের মহড়ার কয়েক দিন পরেই এ সতর্কতা দিল চীন। চীনের নতুন হুঁশিয়ারিকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিবিসির আজ শনিবারের খবরে জানা যায়, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার পেন্টাগনের প্রেস সচিব জন কিরবি চীন-তাইওয়ানের সম্পর্ক নিয়ে সাংবাদিকদের জানান, চীনের ধরনের হুঁশিয়ারি দুর্ভাগ্যজনক। তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে এমন উত্তেজনার কোনো কারণ খুঁজে পায় না পেন্টাগন।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাইওয়ান ও এশিয়া ইস্যুতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার পর এমন হুঁশিয়ারির কথা জানাল চীন।
তাইওয়ানকে তাদের বিচ্ছিন্ন প্রদেশ বলে মনে করে চীন। তবে তাইওয়ান নিজেদের সার্বভৌম দেশ বলে দাবি করে। তাইওয়ানের নিজেদের সংবিধান, সেনাবাহিনী ও নির্বাচিত নেতা রয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, তাইওয়ানের সরকার দ্বীপদেশটিকে আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে ভেবে উদ্বিগ্ন বেইজিং। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনকে সে পথে যেতে চাপ দিচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই বলেছেন, দেশটি স্বাধীন। আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণার প্রয়োজন নেই বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উ কিয়ান তাইওয়ানের কাছের এলাকায় চীনের সামরিক কর্মকাণ্ডের প্রতি সমর্থন জানান। তিনি বলেন, চীনের নিরাপত্তা রক্ষায় তাইওয়ানে এসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী বাহিনী বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ করছে। তাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, তাঁরা আগুন নিয়ে খেলছেন। নিজেকে পোড়াতে চাইছেন। তাইওয়ানের স্বাধীনতা দাবি মানেই যুদ্ধ ডেকে আনা।
নতুন মার্কিন প্রশাসন মানবাধিকার, বাণিজ্য বিতর্ক, হংকং ও তাইওয়ানের মধ্যেকার খারাপ সম্পর্ক নিয়ে চীনের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে।
তাইওয়ানের মেইনল্যান্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল বলেছে, তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে চীনের অবজ্ঞা করা উচিত না।
১৯৪৯ সালে চীনের গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় থেকে চীন ও তাইওয়ানে আলাদা সরকার রয়েছে। তাইওয়ানের আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ড সীমিত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বেইজিং।
সম্প্রতি কয়েক বছরে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। বেইজিং দ্বীপদেশটি নিজেদের দখলে রাখতে বল প্রয়োগ করছে।
মুষ্টিমেয় কয়েকটি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাইওয়ানের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে বেশ কয়েকটি দেশের শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে।
তবে তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই।