চীনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। আজ মঙ্গলবার দেশটির সর্বশেষ আদমশুমারির প্রকাশিত তথ্যে এ কথা বলা হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, গত ১০ বছরে গড় বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ। অথচ আগের দশকে (২০০০–২০১০) এ হার ছিল শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ। এখন দেশটির মোট জনসংখ্যা ১৪১ কোটি।
এক দশকের এ আদমশুমারির প্রতিবেদন গত এপ্রিলে প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল। গত বছর এই আদমশুমারি পরিচালিত হয়। প্রায় ৭০ লাখ কর্মী দরজায় দরজায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন।
চীনের এক দশক ধরে থাকা বিতর্কিত ‘এক সন্তান’ নীতির পরিবর্তন হয় ২০১৬ সালে। ভবিষ্যতে দেশটির কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কায় তখন দুই সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরও আশানুরূপ হারে জনসংখ্যা বাড়েনি।
জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রধান নিং জিঝে সাংবাদিকদের বলেন, চীনের প্রজনন নীতিতে যে সমন্বয় আনা হয়েছে, তা ইতিবাচক ফল এনেছে। তবে তিনি এ–ও বলেন, বয়স্ক লোকজন বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি জনসংখ্যা উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি চাপ সৃষ্টি করছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, ১৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সী লোকজনের সংখ্যা সাত শতাংশ কমে গেছে। অন্যদিকে ষাটোর্ধ্বদের সংখ্যা ৫ শতাংশ বেড়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে বিয়ের হার অনেক কমে গেছে, যার প্রভাব পড়েছে জন্মহারের ওপর। একই সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধি, নারীদের দেরিতে সন্তান নেওয়া বা সন্তান নেওয়ায় অনীহার বিষয়গুলোকে জন্মহার কমে যাওয়ার পেছনের কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
নিং জিঝে আরও বলেন, করোনা মহামারিও একটি কারণ হতে পারে। তিনি বলেন, করোনা জীবনের প্রতিটি দিনকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। এ অবস্থায় হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেওয়া নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এর ফলে দম্পতিদের মধ্যে সন্তান নেওয়ার আগ্রহ অনেক কমে গেছে।
২০২০ সালে ১ কোটি ২০ লাখ শিশু জন্ম নেয়। এর আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ১ কোটি সাড়ে ৪৬ লাখ। তখন বলা হয়েছিল, ১৯৪৯ সালের পর সেটিই ছিল সর্বনিম্ন হার। এখন দেশটির প্রতিটি পরিবারে গড় জনসংখ্যা ২ দশমিক ৬২ জন। ১০ বছর আগে এ সংখ্যা ছিল ৩ দশমিক ১০ জন।