নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

যুদ্ধফেরত ‘ভয়ংকর’ অপরাধীদের কীভাবে সামলাবে রাশিয়া

রাশিয়া সেন্টা পিটার্সবার্গে ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ের কাছে একটি বিলবোর্ডে রাশিয়ার একজন সেনাসদস্য
ছবি: এএফপি

চুরির অপরাধে দণ্ডিত হয়ে রাশিয়ার একটি কারাগারে বন্দী ছিলেন ২২ বছর বয়সী আন্দ্রেই ইয়াসত্রেবভ। এক দিন তাঁর কাছে একটি প্রস্তাব আসে। বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিলে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হবে, সঙ্গে মিলবে মোটা অঙ্কের বেতন। প্রস্তাবে রাজি হন তিনি। সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে যোগ দেন যুদ্ধে। এখন ইয়েসত্রেবভ আবার নিজ দেশে ফিরেছেন। তবে সম্পূর্ণ ‘ভিন্ন’ এক মানুষ হয়ে। পরিবারের ভাষায়, ‘তিনি সব সময় একধরনের ঘোরের মধ্যে থাকেন।’

ইয়েসত্রেবভ যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা বাহিনী ওয়াগনারের হয়ে। রাশিয়ার অনেক অপরাধীই কারামুক্ত আর অর্থের লোভে ওয়াগনারে যোগ দিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছেন। ইয়েসত্রেবভের মতো অনেকে আবার চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় রাশিয়ায় ফিরে আসছেন। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ফিরে আসা এই যোদ্ধাদের মধ্যে ভয়ংকর অপরাধীও রয়েছেন। সামরিক প্রশিক্ষণ পাওয়া এই অপরাধীদের যদি শেষ পর্যন্ত ক্ষমা করে দেওয়া হয়, তাহলে তাঁরা রাশিয়ার জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারেন।

ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন বলেছিলেন, কোনো কারাবন্দী ওয়াগনারে যোগ দিয়ে যুদ্ধে গেলে তাঁকে প্রতি মাসে ১ লাখ রুবল বেতন দেওয়া হবে। ১ লাখ রুবল মানে বাংলাদেশের হিসাবে ১ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

গত বছরের জুলাই থেকে প্রায় ৪০ হাজার রুশ কারাবন্দী ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে পশ্চিমা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ইউক্রেন সরকার ও রাশিয়ার কারাবন্দীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘রাশিয়া বিহাইন্ড বারস’। কারাবন্দীদের এই তালিকায় চুরি ও ডাকাতি থেকে শুরু করে ধর্ষণ ও খুনের সঙ্গে জড়িত অপরাধীরাও রয়েছেন। এই অপরাধীদের ক্ষমা করে দেওয়ার বিষয়ে রাশিয়া বিহাইন্ড বারসের প্রধান ওলগা রোমানোভা বলেন, ‘এখন তাঁরা যে কোনো কিছু করতে পারবেন। আর এটা দেশের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে।’

ছয় মাসেরও বেশি সময় আগে রাশিয়ার বিভিন্ন কারাগার থেকে এই বন্দীদের সংগ্রহ করা শুরু করে ওয়াগনার ও বাহিনীটির প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোনো যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য এত বড় পরিসরে বন্দীদের সংগ্রহ করার ঘটনা ঘটেনি। এসব বন্দীদের ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বাখমুত শহরে যুদ্ধ করতে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের সঙ্গে ওয়াগনার মূলত ছয় মাসের চুক্তি করেছে। চুক্তি শেষে চলতি মাসে তাঁরা রাশিয়ায় ফিরতে শুরু করেছেন। সামনের দিনগুলোতে এই ফেরার সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।  

যুদ্ধক্ষেত্র থেকে কেউ পালিয়ে গেলে, মাদক সেবন করলে বা শারীরিক সম্পর্ক করলে তাঁদের মৃত্যুর সাজা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন প্রিগোঝিন। গত সেপ্টেম্বরে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি ইউক্রেনে যাওয়ার পর মনে করেন, “আমাকে ভুল জায়গায় পাঠানো হয়েছে”, তাঁদের পলাতক বলে ধরে নেওয়া হবে এবং গুলি করে হত্যা করা হবে।’

এই অপরাধীরা দেশে ফিরছেন মেডেল, অর্থ ও কিছু নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে। ওয়াগনার দাবি করছে, নথিগুলো তাঁদের কারাগার থেকে মুক্তির সনদ। এ নিয়ে ওয়াগনার বা রাশিয়ার বিচার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করেনি। তবে রুশ কারাবন্দীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আইনজীবী ইয়ানা গেলমেল বলেন, ‘মানসিকভাবে ভেঙে পড়া এই মানুষগুলো রাশিয়ায় ফেরার পর মনে করছেন যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁরা হত্যা করেছেন মাতৃভূমিকে বাঁচাতে। তাঁরা খুবই ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারেন।’  

কারাবন্দীদের ওয়াগনারে নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস। এসব পক্ষের মধ্যে রয়েছে ওয়াগনারের হয়ে যুদ্ধ করার পর দেশে ফিরে আসা কারাবন্দী, তাঁদের আত্মীয়, মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীসহ বিভিন্নজন। তাঁদের বক্তব্যে ওয়ানগারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও যুদ্ধক্ষেত্রের বর্বরতা ফুটে উঠেছে। আর এ সবকিছুই হয়েছে ক্রেমলিনের সমর্থনে।

রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী শুধু দেশটির রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনই সাধারণ ক্ষমা করতে পারেন। ২০২০ সাল থেকে দেশটিতে সাধারণ ক্ষমার কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

টাইমসের সঙ্গে কথা বলা এমনই একজন আন্দ্রেই মেদভেদেভ। তিনি দক্ষিণ রাশিয়ায় একটি কারাগারে বন্দী ছিলেন চুরির দায়ে। সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার কয়েক দিন পরেই ওয়ানগারে যোগ দেন। ইউক্রেন যুদ্ধে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে মেদভেদেভ বলেন, বাখমুতে কারাবন্দী নিয়ে তৈরি ওয়াগনারের একটি যোদ্ধা দলের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। তাঁদের যে অভিযানে পাঠানো হয়েছিল, তা বলতে গেলে প্রায় আত্মহত্যার মতো।

গত নভেম্বরে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে নরওয়ে চলে গিয়েছিলেন মেদভেদেভ। দেশটিতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন তিনি। ফোনকলে কথোপকথনের এক পর্যায়ে বাখমুতের ওই অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল, যতক্ষণ না মারা যাচ্ছি, ততক্ষণ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে।’  

গত জুলাইয়ের শুরুর দিকে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের কাছে একটি কারাগারে দেখা গিয়েছিল ওয়াগনারের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোঝিনকে। সেখানে কারাবন্দীদের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ইউক্রেন যুদ্ধে ওয়াগনারের হয়ে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে তাঁরা সমাজের প্রতি তাঁদের ঋণ শোধ করতে পারবেন। প্রিগোঝিনের একটি ভিডিও–ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল।

ওই ভিডিওতে তিনি বলেন, কোনো কারাবন্দী ওয়াগনারে যোগ দিয়ে যুদ্ধে গেলে তাঁকে প্রতি মাসে ১ লাখ রুবল বেতন দেওয়া হবে। ১ লাখ রুবল মানে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এই অর্থ রাশিয়ার বাসিন্দারা প্রতি মাসে গড়ে যে বেতন পান, তার দ্বিগুণ। একই সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে কেউ মারা গেলে তাঁর পরিবারকে প্রায় ৮৫ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রিগোঝিন। আর চুক্তি শেষে ছয় মাস পর কেউ বেঁচে ফিরতে পারলে মিলবে কারাগার থেকে মুক্তি।

তবে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে কেউ পালিয়ে গেলে, মাদক সেবন করলে বা শারীরিক সম্পর্ক করলে তাঁদের মৃত্যুর সাজা দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন প্রিগোঝিন। গত সেপ্টেম্বরে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি ইউক্রেনে যাওয়ার পর মনে করেন, “আমাকে ভুল জায়গায় পাঠানো হয়েছে”, তাঁদের পলাতক বলে ধরে নেওয়া হবে এবং গুলি করে হত্যা করা হবে।’

গত জুলাইয়ে প্রিগোঝিনের ওই কারাগার সফরের আইনগত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, রুশ আইন অনুযায়ী দেশটির কারাবন্দীদের কোনো ভাড়াটে যোদ্ধা বাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। তবে বেশ আঁটঘাট বেধেই নেমেছেন প্রিগোঝিন। যেসব কারাবন্দী ওয়াগনারে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের আত্মীয়দের সরবরাহ করা নথিপত্রে দেখা গেছে, ওই কারাবন্দীরা আদৌ যুদ্ধে যাননি বলে কাগজকলমে দেখানো হয়েছে। সেখানে বরং উল্লেখ করা হয়েছে, ওই বন্দীদের ইউক্রেন সীমান্তের কাছে কারাগারগুলোতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।  

রাশিয়ার একটি কবরস্থানে ওয়াগনার গ্রুপের সদস্যদের কবর

কারাবন্দীদের এমন আত্মীয়দের একজন আনাস্তাসিয়া। নিজের নামের শেষাংশ প্রকাশ করতে রাজি হননি তিনি। আনাস্তাসিয়া বলেন, তাঁর ওই আত্মীয় ওয়াগনারের হয়ে ইউক্রেনে নিজ ইচ্ছাতেই গিয়েছিলেন। এ নিয়ে খুবই গর্বিত ছিলেন তিনি। কারণ, অপরাধী হিসেবে নিজের মায়ের সামনে যেতে লজ্জা পেতেন। তবে যে কারাগারে ওই আত্মীয় বন্দী ছিলেন সেখান থেকে তাঁর যুদ্ধে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি আন্তাসিয়াকে। শুধু এটুকু বলা হয়েছিল, তিনি আর সেখানে নেই।

যুদ্ধে যোগ দেওয়া আরেক কারাবন্দী ২৬ বছর বয়সী ইগর মাতিউখিন। কারাগার থেকে মু্ক্তি পাওয়ার লোভে তিনি ইউক্রেন গিয়েছিলেন। তবে যুদ্ধের ময়দানে গিয়ে ওয়াগনারের কর্মকাণ্ডে হতাশ হন। মাতিউখিনের ভাষ্যমতে, ভয় দেখিয়ে তাঁদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বাধ্য করা হতো। এমনকি হত্যার হুমকিও দেওয়া হতো। তাঁর সেনাদলের অন্তত একজনকে নির্দেশ না মানার অভিযোগে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ওই ব্যক্তি আর কখনো ফেরেননি। পরে সুযোগ বুঝে একদিন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যান মাতিউখিন। বর্তমানে রাশিয়াতেই পালিয়ে আছেন তিনি। চেষ্টা করছেন আবার কারাগারে ফিরে যেতে।

এদিকে কারাবন্দী যোদ্ধাদের সংখ্যা কমে যাওয়া ঠেকাতে একটি কৌশল ফেঁদেছে ওয়াগনার। ভিডিও প্রকাশ করে দেখানো হচ্ছে, চুক্তি শেষে যোদ্ধাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এমনই একটি ভিডিওতে প্রিগোঝিনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি চাই যুদ্ধে শত্রুদের হত্যা করতে আপনারা আপরাধী বুদ্ধি কাজে লাগান। যাঁরা ফিরে আসতে চান, আমরাও তাঁদের সেই সুযোগ দিতে চাই। যাঁরা বিয়ে করতে চান, পড়ালেখা করতে চান, আমার আশীর্বাদ নিয়ে তাঁরা এগিয়ে যাবেন।’

কয়েকটি ভিডিওতে আবার দেখা গেছে, চুক্তি শেষে যুদ্ধ থেকে ফেরার পর কারাবন্দীদের সনদ দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, সেগুলো নাকি কারাগার থেকে মুক্তি অথবা অপরাধের দায়মুক্তির সনদ। তবে এই সনদগুলো কখনো জনসমক্ষে আনা হয়নি। তাই সেগুলো আদৌ আসল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা বলছেন, সাজা ক্ষমা করে দেওয়া বিরল, সময়সাপেক্ষ ও জটিল একটি আইনি বিষয়। আর ওয়াগনার যে সংখ্যক কারাবন্দীকে সাধারণ ক্ষমা বা মুক্তি দেওয়ার প্রচার–প্রচারণা করছে, তা শুধু রাশিয়া কেন, বিশ্বে কোথাও কখনো হয়নি।  

রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী শুধু দেশটির রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনই সাধারণ ক্ষমা করতে পারেন। ২০২০ সাল থেকে দেশটিতে সাধারণ ক্ষমার কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে গত শুক্রবার পুতিনের প্রেস সচিব দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, যেসব কারাবন্দী ওয়াগনারে যোগ দিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করেছেন তাঁদের রাশিয়ার আইন মেনেই ক্ষমা করা হচ্ছে। এ নিয়ে বিস্তারিত বলেননি তিনি। এটুকু জানিয়েছেন, প্রক্রিয়াটি রাষ্ট্রীয় গোপন বিষয়।

রাশিয়ার আইন অনুযায়ী, সাধারণ ক্ষমার সব আবেদন যাচাই–বাছাই করে দেখেন বিশেষ আঞ্চলিক কমিটিগুলো। এরপর সেগুলো ক্রেমলিনে যায়। এই কমিটিগুলোর দুজন সদস্য জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তাঁদের কাছে ওয়াগনারে যোগ দেওয়া কারাবন্দীদের সাধারণ ক্ষমা চেয়ে কোনো আবেদন আসেনি। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এই কারাবন্দীদের ক্ষমার বিষয়টি নিয়ে অস্পষ্টতা রাশিয়ার বিচারব্যবস্থার মর্যাদা ক্ষুণ্ন করছে। একই সঙ্গে তাঁদের ভবিষ্যৎ ওয়াগনারের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে।

বলা চলে যাঁকে দিয়ে শুরু করা হয়েছিল, সেই আন্দ্রেই ইয়াসত্রেবভের কথাই। রাশিয়া বিহাইন্ড বারসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ায় ফেরার পর তিনি নাকি আবার ইউক্রেন যুদ্ধে যোগ দিতে চাচ্ছেন। গত শুক্রবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধক্ষেত্রে যা করেছি, সেগুলো সবকিছুই আমার ভালো লেগেছে। সাধারণ মানুষের জীবন খুবই বিরক্তিকর।’