মাঝ-আকাশে হঠাৎ কেন উড়োজাহাজ ঝাঁকুনি খায়? জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উড়োজাহাজগুলোর প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার প্রবণতা ক্রমাগত বাড়ছে। ঝড়বৃষ্টি, ঠান্ডা আবহাওয়া কিংবা গরম, পর্বতের চারপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বাতাস—সব পরিস্থিতিতেই উড়োজাহাজ প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে পড়তে পারে। আর এভাবে মাঝ-আকাশে এখন প্রায়ই উড়োজাহাজের ঝাঁকুনির খবর পাওয়া যাচ্ছে।
ফ্লোরিডাভিত্তিক এম্ব্রি রিডল অ্যারোনটিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টমাস গিন বলেন, ‘মাঝ-আকাশে প্রতিকূল অবস্থা নিয়ে পূর্বাভাস দেওয়ার মতো অসাধারণ যন্ত্র আবহাওয়াবিদদের কাছে থাকলেও সেগুলো যথার্থ নয়।’
রিডল উড়োজাহাজের যাত্রীদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যাত্রীরা যেন সিট বেল্ট পরেন। এতে আহত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকবে।
প্রাথমিকভাবে পাওয়া বিভিন্ন প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি পরিষ্কার আকাশে ঝাঁকুনির কবলে পড়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টস বলছে, ঝাঁকুনির এ ধরন সবচেয়ে বিপজ্জনক।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য বলছে, মেঘমুক্ত পরিষ্কার আকাশে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হলে উড়োজাহাজকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। আর মেঘমুক্ত আকাশ হওয়ায় এ ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতি নিয়ে পূর্বাভাসও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। এ কারণে সমস্যা আরও জটিল হয়ে ওঠে। উড়োজাহাজকে হুট করেই ঝাঁকুনির কবলে পড়তে হয়।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তাবিষয়ক কর্তৃপক্ষের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল খাতে দুর্ঘটনার হার কমলেও দুর্ঘটনা ও আহত হওয়ার ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে ঝাঁকুনি বড় একটা কারণ হয়ে উঠেছে।
তবে বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ঝাঁকুনিসংক্রান্ত মৃত্যুর ঘটনা খুবই বিরল বলে উল্লেখ করেছেন রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যাপক পল উইলিয়ামস।
তবে পল বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উড়োজাহাজের প্রতিকূল পরিস্থিতির কবলে পড়ার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে।