আর্থিক দুর্দশা দ্রুত কাটিয়ে উঠছে শ্রীলঙ্কা। দুই বছর আগে শুরু হওয়া নজিরবিহীন অচলাবস্থা কাটিয়ে দেশটির অর্থনীতিতে গতি ফিরেছে প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত। আজ বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। একই সঙ্গে ২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির যে পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক, সংশোধিত পূর্বাভাসে তা–ও বাড়ানো হয়েছে।
বৈশ্বিক এই ঋণদাতা সংস্থাটির নতুন পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর শ্রীলঙ্কার প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এর আগে গত এপ্রিলে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, ২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ দশমিক ২ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়ানোর পেছনে দেশটির পর্যটন ও আর্থিক খাতে গতি ফেরা এবং একই সঙ্গে অবকাঠামো খাতে অগ্রগতির কথা বলেছে বিশ্বব্যাংক।
তবে সংস্থাটি এ–ও বলেছে, এ বছরের পর টানা দুই বছর শ্রীলঙ্কার প্রবৃদ্ধি কমতে পারে। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে শ্রীলঙ্কার প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপর ২০২৬ সালে তা আরও কমে ৩ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে।
২০২২ সালে অর্থনৈতিক সংকটে রীতিমতো অচল হয়ে পড়েছিল শ্রীলঙ্কা। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম তখন আকাশ ছুঁয়ে যায়; জ্বালানিসংকট চরমে পৌঁছায়; পেট্রলপাম্পগুলোয় অপেক্ষমাণ যানবাহনের সারি কেবল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। জন-অসন্তোষ চরমে ওঠে। গণরোষের মুখে পড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এরপর দায়িত্ব নেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
রনিল বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বে অর্থনৈতিক পুনর্গঠন শুরু করে শ্রীলঙ্কা। বেশ কিছু নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এক বছরের মধ্যে এর ফল পেতে শুরু করে দেশটি। সুনির্দিষ্টভাবে বললে, শ্রীলঙ্কা সরকার ব্যয় কমিয়ে রাজস্ব বাড়িয়েছে আর সংস্কার কার্যক্রম জোরদার করে করজাল বিস্তৃত করেছে।
এরমধ্যেই গত মাসে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন বামপন্থী নেতা অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির পথে ফেরানোই অনূঢ়া প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।