মিয়ানমারের রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য জান্তা সরকারের নতুন আইন

মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং
 ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারের রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আজ শুক্রবার নতুন নির্বাচনী আইন জারি করেছে দেশটির সামরিক জান্তা প্রশাসন। কঠোর আইনটি তৈরিতে কাজ করেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। নতুন এ আইনের আওতায় দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোকে দুই মাসের মধ্যে নতুন করে নিবন্ধন নিতে হবে।

মিয়ানমারে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বরে। সেবার শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল ভোটে জয় পায়। তবে পরের বছরের ফেব্রুয়ারিতেই এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চিকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী।

ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সামরিক জান্তা। জরুরি অবস্থা চলতি জানুয়ারিতেই শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী এর পরপরই নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। যদিও এখন পর্যন্ত নির্বাচনের সম্ভাব্য কোনো তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নির্বাচন সামনে রেখেই নতুন আইন সামনে এনেছে সামরিক জান্তা। এ আইন অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলোকে ৬০ দিনের মধ্যে জান্তা সমর্থিত নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন করতে হবে। আর নিবন্ধনের ৯০ দিনের মধ্যে দলগুলোকে অবশ্যই অন্তত ১ লাখ সদস্য সংগ্রহ করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। একই সঙ্গে ১৮০ দিনের মধ্যে মিয়ানমারের অন্তত অর্ধেক শহরে দলীয় কার্যালয় খুলতে হবে। কোনো দল এতে ব্যর্থ হলে রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের নিবন্ধন বাতিল করা হবে।

তবে মিয়ানমারের বর্তমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে কীভাবে বিভিন্ন প্রান্তের শহরগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্য সংগ্রহ এবং কার্যালয় খোলার বিষয়টি যাচাই করা হবে, তা নতুন আইনে পরিষ্কার করা হয়নি। গত বছরে অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সংঘাত চলছে। একই সঙ্গে ভিন্নমতের মানুষের ওপর সামরিক জান্তা ব্যাপক দমন–পীড়ন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ এনেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

এদিকে চলতি মাসের শুরুতেই মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশে বহু দলের অংশগ্রহণে একটি ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনের আয়োজন করবে সামরিক বাহিনী। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভাষ্য, সামরিক জান্তার অধীনে নির্বাচনের আয়োজন করা হলে, তা হবে একটি ‘ধোঁকাবাজি। যদিও মিয়ানমারের বড় মিত্র ও অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে পরিচিত রাশিয়া এ নির্বাচনকে ইতিবাচক হিসেবেই নিয়েছে।