দীর্ঘদিনের সঙ্গী ক্লার্ক গেফোর্ডকে বিয়ে করেছেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। আজ শনিবার পারিবারিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিয়েটি সম্পন্ন হয়। নেভ নামে তাঁদের পাঁচ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।
২০১৯ সালের মে মাসে তাঁদের বাগ্দান হয়। আর ২০২২ সালের প্রথম দিকে বিয়ের কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারি তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। জেসিন্ডা নিজেই করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে দেশটিতে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেন। বাধ্য হয়ে বাতিল করেছিলেন নিজের বিয়ের আয়োজনও। জেসিন্ডার বয়স এখন ৪৩ আর ক্লার্কের বসয় ৪৭ বছর।
২০১৭ সাল থেকে গত বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে স্বেচ্ছায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যান জেসিন্ডা। এমনকি পরিবারকে সময় দিতে সক্রিয় রাজনীতিকেও বিদায় জানিয়েছেন।
২০১৮ সালের জুনে জেসিন্ডা সন্তানের জন্ম দেন। বিশ্বের ইতিহাসে প্রধানমন্ত্রীর মতো পদে থেকে মা হওয়ার দ্বিতীয় ঘটনা এটি। পরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সম্মেলনে তিনি শিশুসহ যোগ দেন।
জেসিন্ডার এক মুখপাত্র ই–মেইলে জানান, নিউজিল্যান্ডের নর্থ আইল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে হকস বে’র ক্রেগি রেঞ্জ ওয়ানারি এলাকায় বিয়ের অনুষ্ঠানটি হয়। জায়গাটি রাজধানী ওয়েলিংটন থেকে প্রায় ৩১০ কিলোমিটার উত্তরে। হকস বে আঙুরের বাগান ও ওয়াইন তৈরির জন্য আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত।
বিয়ের আনুষ্ঠানিক ছবিতে দেখা যায় জেসিন্ডা সাদা পোশাকে আর ক্লার্কের পরনে সাদা শার্টের ওপর কালো স্যুট। বিয়েতে ৫০–৭৫ জন অতিথি ছিলেন।
দৈনিক নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড পত্রিকার খবরে বলা হয়, অতিথিদের মধ্যে ছিলেন জেসিন্ডার উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিনস (২০২৩–এর জানুয়ারি থেকে নভেম্বর), বর্তমানে তিনি অবশ্য বিরোধী দলীয় নেতা।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে জেসিন্ডা তিনটি ফেলোশিপ পেয়েছেন।
জেসিন্ডা প্রিন্স উইলিয়ামস আর্থশট প্রাইজের ট্রাস্টি এবং ক্রাইস্টচার্চ কলের একজন বিশেষ দূত। ক্রাইস্টচার্চ কল একটি নেটওয়ার্ক, যেটি ‘অনলাইনে সন্ত্রাসী এবং সহিংস চরমপন্থী বিষয়বস্তু নির্মূলে’ কাজ করে। দেশটিতে ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে জুমার নামাজের সময় সন্ত্রাসী হামলা হয়। এতে ৫১ জন নিহত হন। এর পরপরই ক্রাইস্টচার্চ কল নামে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের পর জেসিন্ডা যে সহানুভূতি দেখিয়েছেন, তাতে তিনি সবার মন জয় করে নিয়েছিলেন।
পার্লামেন্টে দেওয়া শেষ ভাষণে জেসিন্ডা টেলিভিশন উপস্থাপক ক্লার্ককে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘চলো, শেষমেশ বিয়েটা করেই ফেলি।’