শ্রীলঙ্কার ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ারের (এনপিপি) নেতা অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে দেশটির প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে এগিয়ে রয়েছেন। চূড়ান্ত ফলাফলে তাঁকে জয়ী ঘোষণা করা হলে আজ রোববারই তিনি শপথ নিতে পারেন। দলীয় সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে দেশটির ডেইলি মিরর অনলাইন।
এনপিপির একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ডেইলি মিরর অনলাইনের খবরে বলা হয়, দিশানায়েকে আজ দিনের শেষ ভাগে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে পারেন, যদি নির্বাচন কমিশন তাঁকে বিজয়ী হিসেবে চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়।
এনপিপির সাধারণ সম্পাদক নিহাল আবেসিংহে ডেইলি মিররকে বলেন, চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশে বিলম্বের কারণে শপথ গ্রহণের সময় নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
নিহাল আরও বলেন, ফলাফলের চূড়ান্ত ঘোষণা সময়মতো করা হলে আজ দিশানায়েকের শপথ গ্রহণ হতে পারে।
শ্রীলঙ্কায় গতকাল শনিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এদিন স্থানীয় সময় সকাল সাতটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হন ৩৯ জন। তবে ভোট শেষে গণনার প্রাথমিক পর্যায়ে তিন প্রার্থীর মধ্যে মূল লড়াইয়ের চিত্র উঠে আসে। তাঁরা হলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, বিরোধী সঙ্গী জন বালাওয়াগার (এসজেবি) সাজিথ প্রেমাদাসা ও এনপিপি জোটের দিশানায়েকে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন পর্যন্ত গণণা করা ভোটে বামপন্থী রাজনীতিবিদ দিশানায়েকে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে আছেন। আজ সকালে প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, তিনি গণনা করা ভোটের প্রায় ৫০ শতাংশ পেয়েছেন।
একজন প্রার্থী যদি মোট ভোটের ৫১ শতাংশ পান, তবে তাঁকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন।
প্রাথমিক ফলাফলে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন সাজিথ। তিনি এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ২৬ শতাংশ ভোট। আর বর্তমান প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহের অবস্থান তৃতীয়। তিনি পেয়েছেন ১৬ শতাংশ ভোট।
দিশানায়েকেকে ইতিমধ্যে তাঁর দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ ও বিক্রমাসিংহের সমর্থকেরা অভিনন্দন জানিয়েছেন।
শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি সাবরি এক্সে (সাবেক টুইটার) বলেছেন, ভোটের প্রাথমিক ফলাফল স্পষ্টভাবে দিশানায়েকের জয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আলি সাবরি আরও বলেন, তিনি রনিল বিক্রমাসিংহের পক্ষে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন। তবে শ্রীলঙ্কার জনগণ তাঁদের রায় দিয়েছেন দিশানায়েকের পক্ষে। তিনি জনগণের এই রায়কে পুরোপুরি শ্রদ্ধা করেন।
চরম আর্থিক দুর্দশার প্রতিবাদে ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক জন-অসন্তোষ দেখা দেয়। আন্দোলনের একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ হাজারো জনতা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়ে। পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালান গোতাবায়া। এরপর পার্লামেন্টের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন বিক্রমাসিংহে। গতকাল দেশটির জনগণ ভোটের মাধ্যমে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুযোগ পান।