টোকিওর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পুরুষ ৫০ বছর বয়সেও বিয়ে করেননি
টোকিওর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পুরুষ ৫০ বছর বয়সেও বিয়ে করেননি

জাপানে বাড়ছে সঙ্গীহীন বয়স্ক মানুষের সংখ্যা

জাপানে একাকী বসবাসকারী প্রবীণ নাগরিকদের সংখ্যা আগামী ২৫ বছরে অনেক বৃদ্ধি পাবে। ২০৫০ সালের মধ্যে দেশটির প্রতি পাঁচটি পরিবারের মধ্যে একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে একা একা জীবন কাটাতে হবে। দেশটির সরকার অনুমোদিত গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি রিসার্চ গতকাল শুক্রবার এ–সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কীভাবে এই বিপুলসংখ্যক প্রবীণ জনসংখ্যার যত্ন নেওয়া যায়, তা খুঁজে বের করার উপায় খুঁজছে জাপান।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি রিসার্চ প্রতি পাঁচ বছর পরপর এ ধরনের একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এবার এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে জাপানে ১ কোটি ৮ লাখ বয়স্ক মানুষ একা বসবাস করবেন, যা দেশটির সব পরিবারের ২০ দশমিক ৬ শতাংশ।

২০২০ সাল থেকে এই প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া লক্ষ করা যাচ্ছে। সে সময় ৭৩ লাখ ৭০ হাজার বয়স্ক মানুষ বা মোট পরিবারের ১৩ দশমিক ২ শতাংশ বয়স্ক মানুষ একা বসবাস করতেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানি তরুণ-তরুণীদের দেরিতে বিয়ে করার প্রবণতা বা অনেকের সন্তান না নেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে এই বিপুলসংখ্যক প্রবীণ জনগোষ্ঠী বেড়ে যাচ্ছে। কারণ, জাপানি তরুণ-তরুণীরা বিয়ে বা সন্তান নেওয়ার মতো আর্থিক ব্যয় নির্বাহের সামর্থ্য আর রাখেন না।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টোকিওর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পুরুষ ৫০ বছর বয়সেও বিয়ে করেননি। আর টোকিও-ভিত্তিক মানবসম্পদ প্রতিষ্ঠান রিক্রুট হোল্ডিংসের তথ্য বলছে, জাপানের ৪৬ শতাংশ পুরুষ ও ৩০ শতাংশ নারী তাঁদের ২০ বছর বয়স পর্যন্ত কখনো ডেট করেননি।

জাপান ক্রমে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। কারণ, দেশটিতে প্রবীণ জনসংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে তাঁদের চিকিৎসা ও কল্যাণ ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই পরিমাণ আয়ের জন্য শ্রমশক্তি কমে যাচ্ছে।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি রিসার্চ বলছে, এখনো অধিকাংশ বয়স্ক মানুষের সন্তান বা ভাইবোনেরা আছেন। একা থাকলে সেই স্বজনেরা তাঁদের দেখাশোনা করতে পারেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে এ বিষয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছে, তবে এখন থেকে ৩০ বছর পর সন্তানহীন বয়স্ক একক ব্যক্তির পরিবারের অনুপাত কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই সব ব্যক্তির ভাইবোনের সংখ্যাও হ্রাস পাবে।

গতকাল প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুসারে, জাপানের মোট জনসংখ্যা ২০২৩ সালে ৫ লাখ ৯৫ হাজার কমে ১২ কোটি ৪০ লাখে দাঁড়িয়েছে।