নিখোঁজদের স্বজনেরা প্রিয়জনের সন্ধান পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন
নিখোঁজদের স্বজনেরা প্রিয়জনের সন্ধান পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন

পাপুয়া নিউগিনিতে আবার ভূমিধসের আশঙ্কা, সরানো হচ্ছে স্থানীয়দের

পাপুয়া নিউগিনিতে আরও ভূমিধস হতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এমন অবস্থায় দুর্গম ভূমিধস এলাকার নিকটবর্তী গ্রামগুলোয় বসবাসকারী ৭ হাজার ৯০০ মানুষকে দূরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার পাপুয়া নিউগিনি সরকার এমন উদ্যোগ নিয়েছে।

২৪ মে ভোরে পাপুয়া নিউগিনির এনগা প্রদেশের ইয়ামবালি গ্রামের কাছে এই ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মাটি চাপা পড়ে দুই হাজারের মতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভূমিধসের এলাকাটি দুর্গম হওয়ায়, সেখানকার একটি সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এবং ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। তার ওপর আশপাশের এলাকায় ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের মধ্যে লড়াই চলছে। এমন অবস্থায় দুর্যোগ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন এনগার প্রাদেশিক প্রশাসক সান্ডিস সাকা।

মাউন্ট মুঙ্গালো থেকে এখনো চুনাপাথর, ময়লা ও পাথরের গুঁড়ো খসে খসে পড়ছে। এমন অবস্থায় নতুন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় স্থানীয় লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সাকা বলেছেন, কর্তৃপক্ষ সমন্বিতভাবে প্রায় ৭ হাজার ৯০০ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

এএফপিকে সাকা বলেন, ‘বিপর্যয় এখনো চলছে। প্রতি ঘণ্টায় পাথর ভেঙে পড়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে। শব্দ শুনতে বোমা এবং গুলির মতো মনে হচ্ছে। পাথরগুলো নিচে পড়ছে।’

গতকাল সোমবার উপগ্রহচিত্রে ভূমিধসের এলাকার ভয়াবহতা ধরা পড়েছে।
শনিবার রাত নাগাদ ধ্বংসস্তূপ থেকে ৫টি মরদেহ এবং একজনের শুধু পা উদ্ধার করা হয়েছে।

গত রোববার জাতিসংঘের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে পাপুয়া নিউগিনির জাতীয় দুর্যোগ কেন্দ্র জানায়, তারা দুই হাজার লোকের প্রাণহানির আশঙ্কা করছে। ভূমিধসের কারণে ভবন ও কৃষিজমিতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানায় তারা।

জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির কর্মকর্তা নিকোলাস বুথ বলেন, ভূমিধসের এলাকায় আসলে কতজন মানুষের বসবাস ছিল, তার সঠিক হিসাব পাওয়া কঠিন। কারণ, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের সংঘাতকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছরে অনেক স্থানীয় লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।

গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাতের কারণে কেন উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে, তা ব্যাখ্যা করেছেন জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তা সেরহান আকতোপ্রাক।

সেরহান আকতোপ্রাক বলেন, ‘অনেক ঘরবাড়ি পুড়ছে, কোনো কোনোটি থেকে ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে। এলাকার সব পুরুষ ছুরি নিয়ে ঘোরাফেরা করছে। আর নারী ও শিশুরা এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।’

দুর্গত এলাকায় পৌঁছানোর চেষ্টা করা একটি ত্রাণবহরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি এ কথা বলেছেন।