দক্ষিণ এশিয়ায় গত কয়েক বছরে আল–কায়েদাসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের প্রচার জোরালো হয়ে উঠেছে। এর কেন্দ্রে রয়েছে ইন্টারনেটে আল–কায়েদার দক্ষিণ এশীয় শাখার তৎপরতা। চার বছর ধরে এই প্রচার পর্যবেক্ষণ করছেন প্রথম আলোর পূর্ব ভারতের সংবাদদাতা শুভজিৎ বাগচী। সে পর্যবেক্ষণ নিয়ে দুই পর্বের এই প্রতিবেদন। আজ রইল প্রথম পর্ব।
জঙ্গি সংগঠন আল–কায়েদা দীর্ঘদিন ধরে একটি পত্রিকা বের করছে। নাম নয়া-এ-গাজওয়া-এ-হিন্দ বা হিন্দের নতুন লড়াই। হিন্দ বলতে শুধু হিন্দুস্তান বা ভারত নয়, বলা হচ্ছে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার কথা। দু–এক মাস অন্তর উর্দু ভাষায় পত্রিকাটি অনলাইনে প্রকাশিত হয়।
এ পত্রিকায় আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান নিয়ে প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ, এমনকি ছোটগল্প থেকে কবিতা সবই থাকে। পেশাদার কোনো পূর্ণাঙ্গ পত্রিকার চেয়ে পিছিয়ে নেই নয়া-এ-গাজওয়া-এ-হিন্দ। আল–কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাব–কন্টিনেন্ট (একিউআইএস) বা ভারতীয় উপমহাদেশে আল কায়েদা পত্রিকাটি বের করে।
উর্দু ভাষার এই পত্রিকা কয়েক বছর ধরে ওয়েবসাইট ছাড়াও ব্যক্তিগত বার্তা বহনকারী টেলিগ্রাম চ্যানেল এবং গ্রুপের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশে—ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে ছড়ানো হচ্ছে বাংলায় অনুবাদ করে। বলা যায়, নয়া-এ-গাজওয়া-এ-হিন্দ এ অঞ্চলে আল-কায়েদার মুখপত্র।
পত্রিকাটির প্রধান উদ্দেশ্য—বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আল–কায়েদার সঙ্গী সংগঠনগুলোর সাফল্য, অর্থাৎ সহিংসতার খবর তুলে ধরার পাশাপাশি ইসলামের স্বর্ণযুগের ইতিহাস ডিজিটাল মাধ্যমে নিয়ে আসা। শুধু সহিংসতার খবরই নয়, বিশ্বরাজনীতি বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির সঙ্গে বিশ্বরাজনীতির সম্পর্ক এবং ভূরাজনীতি থেকে বিভিন্ন দেশে ইসলামের সাহায্য নিয়ে ক্ষমতা দখলের কথাও এতে লেখা হয়। এই পত্রিকায় এমন কিছু বিষয়ে আলোচনা থাকে, যার জন্য বিশ্বরাজনীতি ও ইতিহাসে ভালো জ্ঞান প্রয়োজন। নানা ভাষায় লেখার সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হয় এতে।
একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। পত্রিকাটির সর্বশেষ সংখ্যার (এপ্রিল-মে ২০২৩) একটি দীর্ঘ লেখায় দেখানো হয়েছে, কীভাবে পঞ্চদশ শতকে স্পেনে ইসলামকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল এবং তার সঙ্গে ভারতের বর্তমান হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির কী সম্পর্ক।
দীর্ঘ এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে যেভাবে স্পেন থেকে ইসলাম উচ্ছেদ করা হয়েছিল, তেমনি করা হচ্ছে বর্তমান ভারতে। যেমন স্পেনেও আজকের ভারতের মতোই হিজাব বা বোরকা পরতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। সেখানেও তখন বলা হয়েছিল, আরবি নয় স্পেনের স্থানীয় ভাষা শিখতে হবে এবং তা ব্যবহার করতে হবে। গরু জবাইয়ের ওপরেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। এসব কারণেই ইসলাম স্পেন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে। ভারতেও একই ধরনের আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে।’
১২ শ বছর আগে অষ্টম খ্রিষ্টাব্দে তারিক নামের এক মুর জনগোষ্ঠীর নেতা স্পেন দখল করে ইসলামের শাসন কায়েম করেছিলেন বলে ইতিহাসবিদদের যে দাবি, আল-কায়েদার পত্রিকায় সেই দাবিকে অবশ্য গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কিন্তু স্পেনের বিষয়টি বারবারই ঘুরেফিরে আসে তাঁদের লেখায় বা টেলিগ্রামের গ্রুপ ও চ্যানেলে।
আল–কায়দা মনে করছে, যেভাবে ইসলাম ‘বিপথে চালিত হচ্ছে’, সেভাবে চলতে থাকলে শুধু ভারত থেকেই নয়, যেসব দেশে মুসলমানেরা সংখ্যাগুরু সেসব দেশও অমুসলিমদের হাতে চলে যাবে। ইসলামের অবমাননা হচ্ছে, এমন কিছু দেশের নাম ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে আসছে তাদের পত্রিকায়। এসব দেশের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে আরব আমিরাত শাহী (সংযুক্ত আরব আমিরাত), কাতার, এমনকি সৌদি আরবের নামও রয়েছে।
এরই মধ্যে আফগানিস্তানে শরিয়া-নিয়ন্ত্রিত তালেবান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষত পশ্চিম এশিয়ার ইয়েমেন এবং উত্তর ও পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে আল–কায়েদা প্রবল লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সেসব দেশে জঙ্গি সংগঠনের সাফল্যের কথাও আল–কায়েদার লেখকেরা বারবার তাঁদের লেখায় আনছেন। এসব লেখকের অধিকাংশই হয় মুজাহিদ অথবা বড় মাপের ধর্মীয় নেতা বা ইতিহাসবিদ।
কয়েক বছর ধরে নয়া-এ-গাজওয়া-এ-হিন্দ ইন্টারনেট ব্যবহার করে উপমহাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ও আঞ্চলিক জাতীয়তাবাদের প্রচার করতে শুরু করেছে। সশস্ত্র আন্দোলনেও উৎসাহ দিচ্ছে।
এই প্রচার চলছে মূলত উর্দু ও বাংলা ভাষায়। প্রচারে প্রধানত ব্যক্তিগত বার্তা বহনকারী প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামের গ্রুপ ও চ্যানেল ব্যবহার করা হচ্ছে। পত্রিকায় প্রকাশিত আল-কায়েদার বক্তব্য উর্দু থেকে বাংলায় অনুবাদ করে টেলিগ্রাম চ্যানেলে ছড়ানো হচ্ছে। হিন্দু মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ ছড়ানোর জন্য হিন্দি ভাষায় টেলিগ্রাম ব্যবহার করার আলাদা একটি ধারাও লক্ষ করার মতো। তবে আল-কায়েদার সঙ্গে এর বিষয়বস্তুর কিছু ফারাক রয়েছে।
এক. প্রধানত ভারত থেকে প্রকাশিত হিন্দু আধিপত্যবাদী ‘কনটেন্ট’ প্রায় পুরোপুরি দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতে সংখ্যালঘু–বিদ্বেষের ওপরে। অন্যদিকে আল–কায়েদার প্রচার–পুস্তিকা শুধু হিন্দুত্ববাদের বিরোধিতা করে না, তারা একটি রাজনৈতিক দলের মতো নির্দিষ্ট মতবাদ প্রচার করে, যা তাদের মতে শরিয়তভিত্তিক। তারা কোনো নির্দিষ্ট দেশে সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে নয়; বরং শরিয়তবিরোধী যাবতীয় মতবাদ ও ধর্মপন্থার বিরুদ্ধে।
দুই. আল–কায়েদার সুনির্দিষ্ট সশস্ত্র পরিকল্পনা রয়েছে। তারা ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দেশের সেনা ও গোয়েন্দা বাহিনীর প্রশিক্ষণ পুস্তিকা থেকে খালি হাতে লড়াই এবং সামরিক রণকৌশল বাংলা ভাষায় টেলিগ্রাম ও পত্রিকা মারফত ছড়িয়ে দিচ্ছে। হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর কোনো সামরিক নীতি, কৌশল বা পরিকল্পনা আছে বলে এখনো জানা যায়নি। তাদের প্রচার–পরিকল্পনা কেবলই ভারতে মুসলমান বিরোধিতাকেন্দ্রিক। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক, রণকৌশল, ইতিহাস বা কূটনীতিভিত্তিক আলোচনা হিন্দুত্ববাদী গ্রুপ বা চ্যানেলে কমই পাওয়া যায়।
নির্দিষ্ট এই আদর্শের কারণেই বিশ্বের নানা প্রান্তে আল–কায়েদার সাফল্যের কথা নিয়মিত তাদের পত্রিকা এবং টেলিগ্রাম গ্রুপ ও চ্যানেলে তুলে ধরা হচ্ছে। তারা বিশেষভাবে কয়েকটি অঞ্চলের, যেমন উত্তর ও পূর্ব আফ্রিকার আল–কায়েদা এবং তার ‘অ্যাফিলিয়েট’ জঙ্গি জোট হারকাত আল–শাবাব আল–মুজাহিদীনের (সংক্ষেপে আল–শাবাব) কথা বলছে।
এসব জঙ্গি সংগঠন অন্তত চার-পাঁচটি দেশের কিছু প্রদেশে প্রায় সেসব দেশের সরকারের মতো শক্তিশালী। যেমন সোমালিয়া, মালি, বুরকিনা ফাসো, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা প্রভৃতি। এসব দেশে প্রতি মাসে প্রতিটি হামলার বিস্তারিত খবর প্রকাশ করে আল-কায়েদা। সে খবরগুলো বাংলায় অনুবাদ করে উপমহাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। হামলার কারণ ও বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়।
সোমালিয়াসহ উত্তর ও পূর্ব আফ্রিকা ছাড়াও পশ্চিম এশিয়ার কিছু দেশের, যেমন ইয়েমেনের সশস্ত্র হামলার খবর নিয়মিত পত্রিকায় দেওয়া হয়। এসব খবর বলে দেয়, কোথায় কোথায় আল-কায়েদা বা তার সঙ্গী–সংগঠন তাদের অবস্থান জোরদার করতে পেরেছে।
তাদের দীর্ঘ চার বছরের প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণ করলে বুঝতে অসুবিধা হয় না আল-কায়েদা কোথায় কীভাবে কাজ করছে। অনেকটা বহুজাতিক সংস্থা যেভাবে ছোট ব্যবসায়িক সংস্থাকে ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি’ দেয়, তেমনই পাকিস্তানে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান, এশিয়ায় আল–কায়েদা ইন্ডিয়ান সাব–কন্টিনেন্ট এবং আফ্রিকায় আল–শাবাব আল-কায়েদার হয়ে কাজ করে। তাদের আরও কিছু শাখা সংগঠনও রয়েছে।
পত্রপত্রিকা এবং টেলিগ্রাম গ্রুপ ও চ্যানেলে আল–কায়েদা যেসব দেশ সম্পর্কে নিয়মিত বক্তব্য ও মতামত প্রকাশ করে থাকে, তার অন্যতম আফগানিস্তান। দেশটি নিয়ে এত গুরুত্ব দেওয়ার কারণ বুঝতে অসুবিধা হয় না। ২০ বছর লড়াইয়ের পর দুই বছর আগে ২০২১ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তাদের এই প্রস্থানকে নিকট অতীতে আফগানিস্তানের মুজাহিদ ও শরিয়ত নির্ধারিত জিহাদের সর্বোচ্চ সাফল্য বলে আল-কায়েদা মনে করে। এটা তারা গত দুই বছর ধরেই বলে আসছে।
আল–কায়েদা নিয়মিত আফগানিস্তানের তালেবান সরকার ইমারত-এ-আফগানিস্তানের প্রশংসা করছে। লক্ষণীয় হলো, ২০২১ সালের আল-কায়েদার প্রতিবেদনগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, আফগান সরকারের প্রতি এই জঙ্গিবাদী সংগঠনটি যথেষ্ট বিরূপ ছিল। আল–কায়েদা নেতৃত্ব মনে করছিল, ইসলামি আইন বা শরিয়ত মেনে সেখানে সরকার পরিচালিত হচ্ছিল না।
তালেবান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর সাম্প্রতিক সংখ্যায় আবার আফগান সরকারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সংখ্যার ২৩ অধ্যায়ের শিরোনাম ‘কাবুলের উন্নতি স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে’। এই অধ্যায়ে তালেবান আমলে আফগানিস্তানে কী উন্নয়ন হয়েছে, সেসব তুলে ধরা হয়েছে।
অধ্যায়টিতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নারী ও শিশু সুরক্ষার ওপর। শিশুদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘দারিদ্র্যের কারণে মানুষ শিশুদের বিক্রি করছে। এ কারণে শিশুদের, বিশেষত বাচ্চাছেলেদের বিক্রি বন্ধের চেষ্টা করছে সরকার। প্রয়োজনমতো ক্ষতিপূরণও দেওয়া হচ্ছে।’ কোথায় কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে, তার কিছু উদাহরণও দেওয়া হয়েছে।
পত্রিকার খবরে বলা হয়, নারীদের মধ্যে যাঁরা বাড়িতে থাকেন, যেমন যাঁরা পরিবার বা স্বামী পরিত্যক্তা, বয়স্ক বা (যুদ্ধের কারণে) বিধবা—সরকার তাঁদের ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, যেসব নারী সরকারি সংস্থায় কাজ করতেন, তালেবান ক্ষমতায় আসার পরে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নারী কর্মকর্তাদের সরানো প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যাঁদের সরানো হয়েছে, তাঁরা মূলত কূটনৈতিক ও সরকারি দপ্তরে কাজ করতেন। তাঁরা জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রচারের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। সেই কারণেই তাঁদের সরানো হয়েছে। তবে তাঁদের বেতন–ভাতা বন্ধ করা হয়নি, তাঁরা বাড়িতে বসেই বেতন পাচ্ছেন।’
আল–কায়েদার পত্রিকার খবরে আরও বলা হয়, ‘ওই নারী কর্মকর্তাদের বেতন দেওয়ার বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা একবার আমিরুল মুমেনিন (সরকারের প্রধান) মাওলানা হাইবতুল্লাহ আখন্দজাদার কাছে গিয়ে আবেদন করেন। এতে সরকারি কোষাগারের ওপরে চাপ পড়ছে। কিন্তু আখন্দজাদা তাঁদের বলেন, যতই চাপ পড়ুক, এই ভাতা বজায় রাখতে হবে।’
বোঝাই যাচ্ছে, আফগানিস্তানের সরকারের প্রতি আল-কায়েদা বর্তমানে সন্তুষ্ট। তালেবান সরকার নানা ক্ষেত্রে নারীদের স্বাধীনতার ওপরে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। নারীদের ব্যাপারে এসব পদক্ষেপে যে আল-কায়েদার সম্পূর্ণ সমর্থন আছে, তা–ও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজাব আর বোরকা পরেই নারীদের বাইরে বের হতে হবে। এটা না মানলে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটিও আল-কায়েদার পত্রিকায় বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘যেসব নারী সরকারি চাকরি করেন, তাঁরা বোরকা না পরে অফিসে এলে চাকরি যাবে।’
নারীরা প্রকাশ্যে যেতে পারেন কি না, কাদের সঙ্গে যেতে পারেন এবং কোন ক্ষেত্রে তারা কী ধরনের ব্যবহার করতে পারেন—পত্রিকায় তারও দীর্ঘ শরিয়তসম্মত তালিকা দেওয়া হয়েছে। স্পষ্টভাবেই এ বার্তা দেওয়া হয়েছে যে এসব নিয়ম কোনো নারী ধারাবাহিকভাবে লঙ্ঘন করলে কঠোর সাজা পেতে হবে।
লক্ষণীয় হলো, আল–কায়েদার প্রচারমাধ্যমে যাদের একটানা প্রশংসা করা হয়েছে, মাওলানা মহম্মদ উমর তাঁদের অন্যতম, যিনি পশ্চিমা বিশ্বসহ গোটা পৃথিবীতে শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত। তবে আল–কায়েদা ও তাদের মতাদর্শের অনুসারীরা তাঁকে একজন ধর্মীয় গুরু, ইসলামি পণ্ডিত ও নিপুণ রণকুশলী বলে মনে করেন।
আল–কায়েদার পত্রিকাও তাঁকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই ওমরই আফগানিস্তানে তালেবানের জয়ের পথ মসৃণ করার অন্যতম কারিগর বলে ধরে নেওয়া হয়।
উর্দু অনুবাদে সহায়তা: আফাক হায়দার, কলকাতার সাংবাদিক