জলবায়ুর ‘এল নিনো’ পরিস্থিতির কারণে তুরস্কে তাপমাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এতে দেশটির অন্যতম বড় শহর ইস্তাম্বুলের জলাধারগুলোর পানি বাষ্প হয়ে উড়ে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন একজন বিশেষজ্ঞ। শুধু ওমেরলি জলাধার থেকেই প্রতি ঘণ্টায় ১৭ হাজার টন পানি বাষ্প হয়ে উড়ে যাচ্ছে, যা উদ্বেগজনক।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম হুররিয়েত ডেইলি নিউজ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইস্তাম্বুল শহরের পানির চাহিদা মিটিয়ে থাকে ওমেরলি জলাধার। ১৩ জুলাই নাগাদ এই জলাধারের পানির স্তর ৪১ দশমিক ৮৯ শতাংশে নেমে এসেছে। গত বছরের একই সময়ে এই পানির স্তর ছিল ৭১ দশমিক ৫ শতাংশ।
বোয়াজিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক লেভেন্ত কুরনাজ বলেন, জলাধারের পানি কতটুকু বাষ্প হয়ে উড়ে যাবে, তা বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ, তাপমাত্রা ও বায়ুপ্রবাহের ওপর নির্ভর করে।
কুরনাজ বলেন, তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ ওমেরলি জলাধারের পানি বাষ্প হওয়ার পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে ৩৪ হাজার টনে গিয়ে দাঁড়াবে।
এই গবেষক আরও বলেন, ‘ইস্তাম্বুলের জলাধারগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পানি আসে মেলেন নদী থেকে। যতক্ষণ পর্যন্ত মেলেন নদীতে পানি থাকবে, সে ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় খরায় ভুগতে হবে না ইস্তাম্বুলকে। তবে এখনই যত দূর সম্ভব পানি ব্যবহারে আমাদের যত্নবান হতে হবে।’
জলাধারের পানির দূষণ নিয়ে কুরনাজ বলেন, অব্যাহত চরম তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে জলাধারের পানি বাষ্প হয়ে উড়ে যাওয়ার মাত্রা বাড়ছে। আর পানির স্তর যত নিচের দিকে নামতে থাকবে, তলানির দূষণ আরও দৃশ্যমান হবে। যদিও এখন পর্যন্ত এটি জনগণের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়।
এই গবেষক আরও বলেন, ইস্তাম্বুল পানি ও পয়োনিষ্কাশন প্রশাসন জলাধার থেকে পানি নিয়ে পরীক্ষা করে থাকে। যদি ক্ষতিকর কিছু পাওয়া না যায়, তখন এ পানি শহরে সরবরাহ করা হয়। তাই এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। ইস্তাম্বুলের বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ ইতিমধ্যে বোতলজাত পানি পান করে থাকে।
কুরনাজ বলেন, ‘আরেকটু বৃষ্টি হলে পানিদূষণের মাত্রা কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রাকৃতিকভাবেই পানি পরিশোধিত হলে সেটাই বরং ভালো হবে। বর্তমানে আমরা রাসায়নিক ব্যবহার করে আমাদের পানি পরিশোধন করছি।’