উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে রাষ্ট্রীয় একটি আয়োজনে কিম জং–উন ও তাঁর স্ত্রী রি সল–জু
উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে রাষ্ট্রীয় একটি আয়োজনে কিম জং–উন ও তাঁর স্ত্রী রি সল–জু

৪০ ছুঁলেন কিম জং–উন, তবে জন্মদিন নিয়ে রহস্য

অবেশেষে চার দশক পার করেছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং–উন। অন্তত লোকজন তা–ই সন্দেহ করছেন।

উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে এমনিতেই খুব কম বিষয় জানা যায়। দেশটির শাসক কিম তাঁর জন্মদিন আসলে কবে, সে সম্পর্কে কিছুই কখনো জানাননি। আর তাই তাঁর জন্মদিন কবে পালিত হয়, তা নিয়ে উত্তর কোরিয়া–বিষয়ক পর্যবেক্ষকেরা বরাবরই ধন্দে থেকেছেন।

পর্যবেক্ষকদের ধারণা যদি সত্যি হয়, তবে গত সোমবার ৪০–এ পা রেখেছেন কিম। ঠিক ওই দিনই উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম কিম জং–উনের নতুন একটি ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিতে কিম জং–উনকে হাসিমুখে একটি মুরগির খামার পরিদর্শন করতে দেখা গেছে। সঙ্গে ছিল কিম জং–উনের মেয়ে কিম জু–আয়ে। তবে ছবির ক্যাপশনে কিম জং–উনের জন্মদিনের বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।

নিজের জন্মদিন নিয়ে রহস্য জিইয়ে রেখেছেন কিম জং–উন। তবে তাঁর পূর্বসূরিরা এমনটা করেননি। কিম জং–উনের বাবা কিম জং ইল এবং তাঁর দাদা কিম ইল সাং ঘটা করে জন্মদিন উদ্‌যাপন করতেন। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তাঁদের জন্মদিন আয়োজন করা হতো। এমনকি আজও তাঁদের জন্মদিনে উত্তর কোরিয়ায় সরকারি ছুটি রয়েছে।

৮ জানুয়ারি কিম জং–উনের জন্মদিন কি না, সেটা নিশ্চিত নয়। কেনই–বা কিম জং–উন নিজের জন্মদিন সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখেন, তা–ও জানা যায়নি। তবে এর কিছু ব্যাখ্যা রয়েছে। ধারণা করা হয়, তারিখটি ৮ জানুয়ারিই।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে কিম জং–উনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোয় উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তারা তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান। তবে তখনো কিম জং–উনের জন্মতারিখ প্রকাশ করা হয়নি।

এরও বছর ছয়েক আগে মার্কিন বাস্কেটবল তারকা ডেনিস রডম্যান হাজারো মানুষের সামনে জন্মদিনের গান গেয়ে কিম জং–উনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। এসব কারণে ৮ জানুয়ারিই কিম জং–উনের জন্মদিন, এ ধারণা জোরালো হয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং–উন ও তাঁর মেয়ে কিম জু–আয়ে

উত্তর কোরিয়া–বিষয়ক বিশেষায়িত ওয়েবসাইট ওয়ান কোরিয়া সেন্টারের প্রধান গুলসাপ কেওয়াক জন্মতারিখ নিয়ে কিম জং–উনের রহস্য জিইয়ে রাখার কারণ চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, এর বড় একটি কারণ কিম জং–উনের মা কো ইয়ং হুই–এর জাপানে জন্ম নেওয়ার ঘটনা।

১৯১০ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত এখনকার উত্তর কোরিয়া জাপানের উপনিবেশ ছিল। তাই উত্তর কোরিয়ার সমাজে এখনো জাপানকে নিয়ে অবিশ্বাস রয়ে গেছে। তাই মায়ের জাপানে জন্ম নেওয়ার বিষয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা কিম জং–উনের রক্তধারার দাবি দুর্বল করতে পারে।

এ ছাড়া আরও কিছু ব্যাখ্যা থাকতে পারে। অনেকের মতে, কিম জং–উনের বয়স নিয়ে সমস্যা রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন অভিজাত পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠরা মনে করেন, কিম জং–উন এখনো অনেক ছোট। কিম জং–উনের বাবা নিজেও তাঁর ৪০তম জন্মদিনে গিয়ে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিলেন।