জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা

জাপানে কিশিদার উত্তরসূরী নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি আগামীকাল শুক্রবার তাদের নতুন নেতা নির্বাচন করবে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার স্থলাভিষিক্ত হবেন নতুন নেতা। দেশটিতে সাত দশকের বেশির ভাগ সময় ক্ষমতায় থাকা এলডিপির নেতৃত্ব দেবেন তিনি।

এলডিপির নেতৃত্ব দিতে ৯ প্রার্থী দুই সপ্তাহ ধরে প্রচার চালিয়েছেন। এলডিপির প্রধান কার্যালয় টোকিওতে আগামীকাল নতুন নেতা নির্বাচনে ভোট দেবেন দলটির আইনপ্রণেতা ও আঞ্চলিক নেতারা। যেহেতু জাপানের পার্লামেন্টে এলডিপি সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাই দলের নতুন নেতাই হবেন জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী। নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৭৩৬ ভোটের মধ্যে যিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন, তিনিই বিজয়ী হবেন। কেউ যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারেন, তাহলে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুজনের মধ্যে দ্বিতীয় দফা ভোট হবে।

দলীয় প্রধান নির্বাচনের পর আগামী সোমবার কিশিদা ও তাঁর মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করবে। এরপর পার্লামেন্টে নতুন দলীয় নেতা ও কিশিদার উত্তরসূরির নাম ঘোষণা করা হবে। এরপর তিনি নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করবেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী জণগণের রায় জানতে চাইলে আগাম নির্বাচন দিতে পারেন। এলডিপির নেতৃত্বে আগ্রহী অন্যতম শীর্ষ প্রার্থী শিনজিরো কোইজুমি ইতিমধ্যে আগাম নির্বাচন দেবেন বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। তিনি এলডিপির প্রধান হলে আগামী ২৭ অক্টোবর জাপানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

জাপানের কিয়োডো নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান হওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষা প্রধান শিগেরু ইশিবা, উঠতি তারকা ও তরুণ প্রার্থী শিনজিরো কোইজুমি, অর্থনৈতিক নিরাপত্তামন্ত্রী সানায়ি তাকাইচি। ধারণা করা হচ্ছে যে প্রথম দফার নির্বাচনে এ তিনজনের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

এলডিপির ৭৩৬ ভোটারের মধ্যে প্রণেতাদের ভোট ৩৬৮ ও দলীর সদস্যদের ভোট বাকি ৩৬৮। এর মধ্যে ৪০ আইনপ্রণেতা কাকে ভোট দেবেন, তা এখনো ঠিক করেননি। দলীয় নেতা বা আঞ্চলিক নেতাদের মধ্যে ৬৭ বছর বয়সী ইশিবা বেশি জনপ্রিয়। অন্যদিকে রক্ষণশীল প্রার্থী ৬৩ বছর বয়সী তাকাইচির সঙ্গে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তবে তৃণমূল পর্যায়ে ইশিবার সঙ্গে তৃণমূলে টক্কর দিচ্ছেন ৪৩ বছর বয়সী কোইজুমি।

কিয়োডো নিউজের জরিপ অনুযায়ী, কোইজুমিকে সমর্থন দিচ্ছেন অন্তত ৫০ জন আইনপ্রণেতা। অন্যদিকে ৪০ জন করে আইনপ্রণেতার সমর্থন পাচ্ছেন তাকাইচি ও ইশিবা।

গত আগস্ট মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ঘোষণা দেন যে আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় দেশটির ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতৃত্বের নির্বাচনে তিনি লড়বেন না। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে পরবর্তী তিন বছরের জন্য এলডিপির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ফুমিও কিশিদা। এরপর জাতীয় নির্বাচনে জিতে একই বছরের অক্টোবরে তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী হন।

এলডিপির ভেতরে বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশিত হওয়ায় ফুমিও কিশিদার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। করোনা মহামারি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা মাথায় নিয়ে ইউশিহিদে সুগা বিদায় নিলে এলডিপির প্রধান হয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী হন ফুমিও কিশিদা। এর আগে তিনি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।