আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় খোস্ত প্রদেশে একটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এতে ১০০টির মতো দেহাবশেষ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গণকবরটি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন–সমর্থিত সরকারের আমলের।
গত শনিবার খোস্তের মধ্যাঞ্চলের সারবানি এলাকায় একটি বাঁধ নির্মাণের কাজ চলার সময় কবরটির সন্ধান পাওয়া যায়।
খোস্ত শহরের মেয়র বিসমিল্লাহ বিলাল বলেন, ‘প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, গণকবরে যাঁদের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে, আফগান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১৩৫৮ সালে হত্যার পর তাঁদের কবর দেওয়া হয়েছিল।’ আফগান ক্যালেন্ডারের ১৩৫৮ সালের ব্যাপ্তি খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডারে ১৯৭৯ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৮০ সালের মার্চ পর্যন্ত।
বিলাল আরও বলেন, গণকবরে ‘অন্তত ১০০টি দেহাবশেষ’ পাওয়া গেছে। কিছু দেহাবশেষে নারীদের পোশাক পাওয়া গেছে। সবাই বেসামরিক ব্যক্তি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দেহাবশেষগুলো সেই ব্যক্তিদের, যাঁদের ১৯৭৮ সালে সোভিয়েত-সমর্থিত কমিউনিস্টদের অভ্যুত্থানের সময় হত্যা করা হয়েছিল।
সালাম শরিফির বাবা কমিউনিস্ট সরকারের সময় নিখোঁজ হয়েছিলেন। তাঁর মরদেহ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। সালাম শরিফি বলেন, ১৩৫৮ সালে (আফগান ক্যালেন্ডার অনুসারে) এই ব্যক্তিদের নিষ্ঠুরভাবে বিচার ছাড়াই কমিউনিস্ট কর্তৃপক্ষ জোর করে এখানে নিয়ে এসেছিল। তিনি বলেন, তাঁরা শহীদ হয়েছিলেন এবং আমরা তাঁদের বংশধর। এটি এমন এক নিষ্ঠুরতা, যা ইতিহাস কখনো ভুলবে না।
দেহাবশেষগুলো স্থানান্তরে একটি কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা পৌরসভার কর্মীদের দেহাবশেষগুলো সরাতে সাহায্য করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মান্দাইর মঙ্গল বলেন, ‘এই শহীদদের পরিচয় কেউ জানে না। তাঁদের সবাইকে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল এবং আমরা হাড়গুলো বের করে গুছিয়ে রাখছি।’
কয়েক দশকের সংঘাতের পর এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানজুড়ে অনেক গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত বাহিনীর আক্রমণ, গৃহযুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর তালেবানবিরোধী অভিযান ইত্যাদি কারণে সংঘাত লেগেই ছিল দেশটিতে।
এর আগে ২০০৯ সালে সোভিয়েত-সমর্থিত শাসনামলের আরেকটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। তাতে অন্তত ২০ জনের দেহাবশেষ পাওয়ার দাবি করা হয়েছিল।