গত আগস্টে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে তালেবান কর্তৃপক্ষ ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের নেতৃত্ব দিয়েছে। এর মধ্যে ১৬০ জন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য হত্যা, নির্যাতন, নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং অমানবিক শাস্তির কয়েক ডজন ঘটনা রয়েছে। আফগানিস্তানের মানবাধিকার শীর্ষক জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের
জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তালেবান ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর আফগানিস্তানে সাংবাদিকেরাও ব্যাপক নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার এক সাংবাদিক অভিযোগ করেন, তাঁকে কাবুলে আটক করে প্রতিবেদন প্রত্যাহার করার জন্য টুইট করতে বাধ্য করা হয়েছিল। গত আগস্ট মাস থেকে দেশটিতে ১৭৩ জন গণমাধ্যমকর্মী আটক, হুমকি, দুর্ব্যবহার এবং লাঞ্ছনাসহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
জাতিসংঘ বলছে, আফগানিস্তানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক, তালেবান সরকরের নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের অবিরাম অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তালেবান সরকারকে কোনো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকৃতি দেয়নি। যে তালেবান সদস্যরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তাঁদের দায়মুক্তি নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। সমালোচকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন পীড়ন, গণমাধ্যম, প্রতিবাদকারী এবং সুশীল সমাজের কর্মীদের লক্ষ্য করে আক্রমণের ঘটনা দেশটির মানবাধিকার সমস্যাটিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
জাতিসংঘ আরও বলেছে, তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সময় বেসামরিক হতাহতের ঘটনা কমলেও সরকার নাগরিকদের বিশেষ করে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। সশস্ত্র সংঘাতে গত বছরের ১৫ আগস্ট থেকে চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে ৭০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। অধিকাংশ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের আত্মঘাতী হামলায়।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনের সমালোচনা করে বলছেন, এগুলো অপপ্রচার। নথির তথ্য সঠিক নয়। তিনি টুইট করে বলেন, আফগানিস্তানে নির্বিচারে হত্যা বা গ্রেপ্তারের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যদি কেউ নির্বিচারে হত্যা বা গ্রেপ্তার করে, তবে তাঁকে অপরাধী বলে গণ্য করা হবে এবং শরিয়া আইনের মুখোমুখি করা হবে।