আফগানিস্তানে নারীদের শরীর ও মুখ ঢেকে চলাফেরা করার নিয়ম বেঁধে দিয়েছে তালেবান
আফগানিস্তানে নারীদের শরীর ও মুখ ঢেকে চলাফেরা করার নিয়ম বেঁধে দিয়েছে তালেবান

আফগানিস্তানে আইন কার্যকর: নারীদের মুখ ঢেকে চলতে হবে, পুরুষদের দাড়ি রাখতে হবে

আফগানিস্তানে নীতিনৈতিকতা-বিষয়ক একগুচ্ছ নিয়মকানুন গত সপ্তাহে আইন হিসেবে নথিভুক্ত ও কার্যকর করা শুরু করেছে তালেবান সরকার। আইনের আওতায় দেশটিতে নারীদের মুখ ঢেকে চলতে হবে ও পুরুষদের দাড়ি রাখতে হবে; গাড়ি চালানোর সময় বাজানো যাবে না গান; বাদ দেওয়া যাবে না নামাজ আদায় ও রোজা পালন।

আফগানিস্তানের বিচার মন্ত্রণালয় এসব কথা জানিয়েছে।

আফগানিস্তানে শরিয়াহ আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এসব নিয়মকানুন কার্যকর করবে নৈতিকতা–বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর আগে ২০২২ সালে তালেবানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার জারি করা এক ডিক্রিতে ওই নিয়মকানুনের কথা জানানো হয়েছিল। এখন সেটাই আইনে রূপ দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিচার মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।

নৈতিকতা–বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে একই ধরনের কিছু নিয়ম কার্যকর করা শুরু করেছে। নিয়মভঙ্গের জন্য হাজারো মানুষকে আটকের ঘটনাও ঘটেছে। তবে নতুন করে নথিবদ্ধ নিয়মগুলো কতটা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে, সেটা এখনো নিশ্চিত নয়।

পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, নারীর অধিকার নিশ্চিত না করা ও মেয়েদের বিদ্যালয় খুলে না দেওয়ায় তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি অনেকাংশে থমকে আছে। তালেবানের ভাষ্য, তারা নারীদের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে সেটা অবশ্যই শরিয়াহ আইন ও স্থানীয় রীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়া যাবে না।

বিচার মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বরকতুল্লাহ রাসোলি বলেন, সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার অনুমোদনের পর গত বুধবার নৈতিকতা–বিষয়ক ৩৫টি নিয়মকানুন আইন হিসেবে কার্যকর ও নথিবদ্ধ করা হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী, আফগানিস্তানে নারীদের পুরো শরীর ও মুখ ঢেকে চলাফেরা করতে হবে। পুরুষদের দাড়ি কাটার ওপর বিধিনিষেধ আরোপিত থাকবে। সেই সঙ্গে নামাজ আদায় ও রোজা পালন বাদ দেওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে।

২০২১ সালের আগস্টে পশ্চিমা–সমর্থিত আশরাফ গনি সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতায় আসে তালেবান। এর পর থেকে তালেবানের তরফে নারীদের প্রতি ও বাক্‌স্বাধীনতার ওপর আরোপিত কিছু বিধিনিষেধ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও বিদেশি সরকারের কাছে সমালোচিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, নারীদের অধিকার নিশ্চিত না করা ও মেয়েদের বিদ্যালয়গুলো খুলে না দেওয়ার কারণে তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি অনেকাংশে থমকে আছে।

তালেবানের ভাষ্য, তারা নারীদের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে সেটা অবশ্যই শরিয়াহ আইন ও স্থানীয় প্রথার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বিষয়কে দেখতে হবে স্থানীয়ভাবেই।