নিমা রিনজি
নিমা রিনজি

১৮ বছর বয়সে ১৪ পর্বত জয়ের রেকর্ড

পর্বতারোহীরা আজীবন যে স্বপ্নের পেছনে ছুটে বেড়ান, মাত্র ১৮ বছর বয়সে সেই স্বপ্ন ছুঁয়ে ফেলেছেন নেপালের নিমা রিনজি শেরপা। গতকাল বুধবার সকালে তিনি তিব্বতের ৮ হাজার ২৭ মিটার উঁচু শিশা পাংমা পর্বতের চূড়ায় পৌঁছান। এর মধ্য দিয়ে এই তরুণ সবচেয়ে কম বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উচ্চতার ১৪টি পর্বতের সবই জয় করলেন।

এই ১৪টি পর্বতের সব কটির উচ্চতা ৮ হাজার মিটারের বেশি। এসব পর্বতকে একসঙ্গে ‘আট হাজারি’ পর্বতশৃঙ্গ বলা হয়। নিমা রিনজির বাবা তাশি শেরপা এএফপিকে বলেছেন, ‘সে আজ সকালে চূড়ায় পৌঁছেছে। সে খুব ভালোভাবে প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং আমি জানতাম যে সে এটা পারবে।’

আট হাজারের বেশি উচ্চতার এসব পর্বত জয় করতে পর্বতারোহীদের ‘ডেড জোন’ বা ভয়ংকর এলাকা পার হতে হয়। ডেড জোনের বাতাসে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন থাকে না। শিশা পাংমা পর্বত জয়ের পর এক বিবৃতিতে নিমা বলেন, ‘এই জয় শুধু আমার ব্যক্তিগত লক্ষ্যের চূড়ায় পৌঁছানো নয়, বরং এই জয় ওই সব শেরপার জন্য, যাঁরা বহুদিন ধরে প্রথার নামে চাপিয়ে দেওয়া সীমাবদ্ধতাকে পেছনে ফেলে স্বপ্নের পেছনে ছোটার সাহস দেখিয়েছেন। পর্বতারোহণ শুধু শ্রমসাধ্য নয়, বরং এর থেকে বেশি কিছু। এটা আমাদের দৃঢ়তা, সহনশীলতা ও আবেগের বহিঃপ্রকাশ।’

নিমা যাঁর রেকর্ড ভেঙেছেন তিনিও একজন নেপালি, নাম মিংমা গিয়াবু ‘ডেভিড’ শেরপা। ২০১৯ সালে ৩০ বছর বয়সে তিনি এই রেকর্ড গড়েছিলেন। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ১৪টি পর্বতশৃঙ্গ হিমালয় ও কারাকোরাম পর্বতমালায় অবস্থিত, যা নেপাল, চীন, ভারত ও পাকিস্তানে বিস্তৃত। বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয়ের এমন অভিযান পর্বতারোহীদের জন্য বিশাল মর্যাদার।

নিমা আগেও একাধিক রেকর্ড গড়েছেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতগুলোয় আরোহণ শুরু করেন। ২০২২ সালের আগস্টে তিনি মাউন্ট মানাসলু (৮ হাজার ১৬৩ মিটার) জয় করে নিজের লক্ষ্যের পেছনে যাত্রা শুরু করেন। এরপর তিনি একে একে জয় করেন এভারেস্ট, লোৎসে, নাগা পর্বত, গাশারব্রুম ১, গাশারব্রুম ২, ব্রড পিক, কে টু, ধৌলাগিরি, চো ওয়ু, অন্নপূর্ণা, মাকালু।

চলতি বছরের জুনে নিমা কাঞ্চনজঙ্ঘা জয় করে নিজের লক্ষ্যের খুব কাছে পৌঁছে যান। শিশাপাংমা জয় করে স্বপ্নের চূড়ায় পৌঁছান তিনি। নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নিমা নুরু শেরপা বলেছেন, ‘নিমার এ জয় দেশের জন্য দারুণ গর্বের। সে সব প্রথা ভেঙে এগিয়ে গেছে। নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকলে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। নিমার সাফল্য এই বার্তাই দিয়েছে।’