ওয়াশিংটনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা স্থগিত করাকে চীনের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি অভিযোগ করেন, তাইওয়ানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে চীন। তারা শান্তিপূর্ণ সমাধানের পরিবর্তে শক্তি প্রয়োগের দিকে হাঁটছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, তাইওয়ান ঘিরে চীনের সামরিক মহড়ার প্রেক্ষাপটে গতকাল শনিবার এসব কথা বলেন ব্লিঙ্কেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর থেকে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। তাইওয়ানের চারপাশে চীন তাদের যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজের মহড়া চালাচ্ছে।
গতকাল ম্যানিলায় এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, সামরিক আলোচনা, মাদক, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সহযোগিতা স্থগিতের সিদ্ধান্ত শুধু যুক্তরাষ্ট্রকেই ভোগাবে না, সারা বিশ্ব এর ফল ভোগ করবে।
ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, ‘চীনের সঙ্গে বেশ কয়টি সামরিক সহযোগিতার চুক্তি রয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি এবং সংকট এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু সহযোগিতা স্থগিত করা মানে যুক্তরাষ্ট্রকে শাস্তি দেওয়া নয়, এটি বিশ্বকে বিশেষ করে উন্নয়নশীল বিশ্বকে শাস্তি দেওয়া।’
ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে চীন-তাইওয়ান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা বাড়ে। পেলোসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে চীন। জলবায়ু, সামরিক, মাদক চোরাচালান বন্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত করে তারা। সেই সঙ্গে তাইওয়ানের চারপাশে সামরিক মহড়া অব্যাহত রেখেছে চীন। এ কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে অনেক দেশের এয়ারলাইনস তাইওয়ানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলেছে।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড তাইওয়ান প্রণালিতে মহড়া চালাচ্ছে। তারা বলছে, সেনাদের সক্ষমতা যাচাইয়ে তাইওয়ানের উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলে আকাশ ও সমুদ্রে মহড়া চলছে। চীনের চার দিনব্যাপী মহড়া আজ রোববার শেষ হওয়ার কথা।
মহড়া প্রসঙ্গে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, চীনের ৬৮টি যুদ্ধবিমান ও ১৩টি জাহাজ সামরিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। অবশ্য চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ১০টির বেশি যুদ্ধজাহাজ ও ১০০টির বেশি যুদ্ধবিমান মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।