আগাম নির্বাচনে দলের বিপর্যয় সত্ত্বেও ক্ষমতা ছাড়বেন না জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। সোমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এর আগে গত রোববারের নির্বাচনে তাঁর দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে।
১ অক্টোবর জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন ৬৭ বছর বয়সী ইশিবা। এরপরই তিনি আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন। কিন্তু তহবিল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত এলডিপির ওপর ক্ষুব্ধ জনগণ ভোটের মাধ্যমে ১৯৫৫ সাল থেকে জাপানের ক্ষমতায় থাকা এলডিপিকে শাস্তি দিয়েছে। তবে ইশিবা বলেন, তিনি রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হতে দেবেন না। সাংবাদিকদের ইশিবা বলেন, ‘আমি জনগণের জীবন ও জাপানকে রক্ষা করতে চাই।’ এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে একটি কেলেঙ্কারি ঘিরে মানুষের মনে সন্দেহ, আস্থাহীনতা ও ক্ষোভ। ওই কেলেঙ্কারিতে তাঁর দলের নেতারা জড়িত। বিভিন্ন তহবিল সংগ্রহের কর্মসূচি থেকে নেতারা নিজের পকেটে অর্থ ঢুকিয়েছেন। এ কারণেই তাঁর পূর্বসূরি ফুমিও কিশিদাকে সরে যেতে হয়েছে।
জাপানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নির্বাচনে কোনো দলই প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে পারেনি। ভোটাররা দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার ক্ষমতাসীন জোটকে ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এমন অবস্থায় বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে সরকার গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ইশিবার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও তাদের জোটের সহযোগী দল কোমেইতো পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নির্বাচনে ২১৫টি আসন পেয়েছে। আগেরবারের চেয়ে তাদের আসনসংখ্যা কমেছে। এর আগে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে তাদের আসনসংখ্যা ছিল ২৭৯।
নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জাপান (সিডিপিজে) সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। তাদের আসনসংখ্যা বেড়ে ১৪৮ হয়েছে। আগে তাদের আসনসংখ্যা ছিল ৯৮। তবে এরপরও সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে পিছিয়ে আছে তারা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে ২৩৩টি আসন প্রয়োজন।
সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী, সরকার গঠন করতে জোট গঠনের জন্য দলগুলো হাতে ৩০ দিন সময় পাবে। এক মাসের আগে প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইশিবা কত দিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। নির্বাচনে ছোট দলগুলোর অর্জনও উল্লেখযোগ্য। আলোচনায় তাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।