যথাযথভাবে সময় ব্যবস্থাপনা ছাড়া শীর্ষ পর্যায়ের কোনো ক্রীড়া আসরেরই আয়োজন করা যায় না। কাতার বিশ্বকাপের খেলায় সময় ব্যবস্থাপনা এবং যথার্থতা নিশ্চিতের জন্য সুইজারল্যান্ডের কোম্পানি ইউব্লোর (Hublot) তৈরি একটি বিশেষ সংস্করণের ঘড়ি ব্যবহার করছেন রেফারিরা।
কাতার বিশ্বকাপের ৬৪টি ম্যাচ পরিচালনার জন্য ১২৯ জন রেফারিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খেলা পরিচালনার সময় তাঁরা হাতে যে ঘড়ি পরছেন, তা ইউব্লোর তৈরি। বিশ্বকাপ উপলক্ষে তৈরি এ সংস্করণের নাম দেওয়া হয়েছে বিগ ব্যাং ই ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ কাতার ২০২২।
এ ঘড়ির মাধ্যমে রেফারিরা ম্যাচের খুঁটিনাটি তথ্য পেয়ে যান। মাঠে নামার ঠিক ১৫ মিনিট আগেই ম্যাচের দুই পক্ষের প্রথম একাদশের ফুটবলারদের সব তথ্য পেয়ে যান রেফারিরা। মাঠে নেমে খেলা শুরুর সময় থেকে অতিরিক্ত সময়ের যাবতীয় তথ্যই নিজের ভেতরে ধারণ করে ‘বিগ ব্যাং ই’। সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তগুলো তাৎক্ষণিক এ ঘড়িতে ধারণ হয়ে যায়।
ম্যাচ চলার সময় গোল, পেনাল্টি, হলুদ কিংবা লাল কার্ড এমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটলেই ঘড়িটির ডায়ালের প্রান্তভাগে ওই খেলোয়াড়ের নামসহ বিশেষ অ্যানিমেশন দেখা যায়। সেখানে দেখা যায়, কখন ঘটনাটি ঘটল। ওই ঘড়ি পরিধানকারী রেফারি ঘড়ির ডায়ালে স্ক্রল করে অ্যানিমেশনটি রিপ্লে অর্থাৎ আবারও প্রথম থেকে দেখতে পারেন। ডায়ালে প্রদর্শিত স্কেলের ওপর একটি ফুটবলের প্রতীক দিয়ে ম্যাচের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত বিস্তারিতভাবে দেখানো হয়।
কাতার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ শুরুর কাউন্টডাউন হয়েছিল এ ঘড়ি দিয়েই। বিগ ব্যাং ই ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপ কাতার ২০২২ সংস্করণের ঘড়িটির কেস কালো রঙের সিরামিক এবং টাইটেনিয়ামের তৈরি। এটি ৪৪ মিলিমিটার পুরু।
বিগ ব্যাং ই ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ কাতার ২০২২ ঘড়ির সংখ্যা ১ হাজারটিতে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। ঘড়িতে রয়েছে চওড়া ডায়াল এবং বেল্ট। এর অফিশিয়াল সংস্করণটি কাতারের পতাকার রঙে তৈরি করা। তবে অন্য দেশের ভক্তরা চাইলে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ৩২ দলের প্রতিটির রঙের সংস্করণ বেছে নিতে পারছেন।
ঘড়িটিতে গুগলের ওয়্যার ওএস-এর কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ওয়্যার ৪১০০ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। ঘড়িতে আছে একটি অ্যাক্সেলেরোমিটার, একটি জাইরোস্কোপ, একটি মাইক্রোফোন, একটি স্পিকার, জিপিএস এবং একটি হৃৎস্পন্দন পরিমাপক যন্ত্র।
এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপে ইউব্লো ব্র্যান্ডের তৈরি ঘড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু তা–ই নয়, উয়েফার ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ এবং চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে শুরু করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফুটবল প্রতিযোগিতার সঙ্গেও এর আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে।
তা ছাড়া জুভেন্টাস, চেলসি, আয়াক্স, বেনফিকার মতো শীর্ষস্থানীয় ক্লাবগুলোর অফিশিয়াল ঘড়ির ব্র্যান্ড ইউব্লো।
ইউব্লোর শুভেচ্ছাদূতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান ফুটবল তারকা আছেন। এর মধ্যে আছেন পেলে, লুই ফিগো, দিদিয়ের দেশম, মার্সেল দেসাই এবং কিলিয়ান এমবাপ্পে। এই তালিকায় রয়েছেন রোমা ক্লাবের প্রধান কোচ হোসে মোরিনহোও। তবে নারী ফুটবলারদের মধ্যে ইউব্লোর একমাত্র শুভেচ্ছোদূত হয়েছেন ল বুলো। সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট