লি সিয়েন ইয়াং
লি সিয়েন ইয়াং

যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নিলেন সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতার ছোট ছেলে

সিঙ্গাপুরের প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা লি কুয়ান ইউয়ের ছোট ছেলে লি সিয়েন ইয়াং যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি নিজেই গতকাল মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে নগররাষ্ট্রটির সবচেয়ে বিশিষ্ট পরিবারের সদস্যদের মধ্যকার চরম মতবিরোধের সর্বশেষ নজির সামনে এসেছে।

লি সিয়েন ইয়াং ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানান, তাঁর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। নিজ দেশে ‘নিপীড়ন’ থেকে বাঁচতে এ প্রক্রিয়া বেছে নিয়েছেন তিনি।

সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা লি কুয়াং ইউ ২০১৫ সালে মারা যান। তাঁর ছোট ছেলে লি সিয়েন ইয়াং ও মেয়ে লি ওয়েই লিং বছরের পর বছর ধরে তাঁদের প্রভাবশালী বড় ভাই লি সিয়েন লুংয়ের কাছ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন ছিলেন। তাঁদের সম্পর্ক বেশ শীতল ছিল। সিয়েন লুং গত মে মাস পর্যন্ত দুই দশক সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

লি ওয়েই চলতি বছরের ৯ অক্টোবর মারা গেছেন। এর আগে বড় ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর ও ভাই লি সিয়েনের বাবার রেখে যাওয়া বাড়ির মালিকানা নিয়ে মতবিরোধের খবর পাওয়া গিয়েছিল।

একসময় দুই ভাইয়ের পারিবারিক মতপার্থক্য প্রকাশ্য রাজনৈতিক বিরোধে রূপ নেয়। ২০২০ সালের নির্বাচনের সময় লি সিয়েন বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ৬৭ বছর বয়সী লি সিয়েন গত বছর জানিয়েছিলেন, তিনি সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার চিন্তা করছেন।

গতকাল ফেসবুক পোস্টে লি সিয়েন বলেন, দেশ ছাড়ার পর তিনি সর্বশেষ ‘অবলম্বন’ হিসেবে ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন। গত আগস্টে যুক্তরাজ্য সরকার তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেছে।

লি সিয়েন বলেন, ‘সিঙ্গাপুর সরকার আমার বিরুদ্ধে যা যা করেছে, সেসব সবাই জানেন, দেখেছেন, নথিবদ্ধ আছে। ওরা আমার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। স্ত্রীর বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ একটি ভুয়া তদন্ত শুরু করেছে। বছরের পর বছর এটা নিয়ে টানাহেঁচড়া চলেছে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, এসবের কারণে বোনের শেষকৃত্যে যোগ দিতে তিনি সিঙ্গাপুরে ফিরতে পারেননি।

‘এসব তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্য সরকার মনে করছে, আমি নিজ দেশে নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছি। তাই আমার জন্য সিঙ্গাপুরে ফেরাটা নিরাপদ হবে না’, বলেন লি সিয়েন।

চ্যানেল নিউজএশিয়ার প্রতিবেদনে সিঙ্গাপুর সরকারের বরাতে লি সিয়েনের তোলা ‘নিপীড়নের’ অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও অমূলক’ বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।