পার্লামেন্টের ৯৩টি আসনের মধ্যে ৮৬টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬টিতে জয় পেয়েছে মুইজ্জুর দল।
মালদ্বীপের পার্লামেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় পেয়েছে প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুর দল পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি)। দেশটির পার্লামেন্ট পিপলস মজলিশের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তা নির্ধারণে রোববার সকাল থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা ভোট গ্রহণ চলে। এরমধ্যেই বেশির ভাগ আসনের ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মালদ্বীপের নির্বাচন কমিশন ৯৩টি আসনের মধ্যে ৮৬টির ফলাফল ঘোষণা করে। এসব আসনের মধ্যে ৬৬টিতে জয় পেয়েছে মুইজ্জুর দল পিএনসি। এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসনের চেয়ে এই সংখ্যা অনেক বেশি। বিদায়ী পার্লামেন্টে পিএনসি ও তাদের শরিকদের মাত্র আটটি আসন ছিল।
মালদ্বীপের এবারের নির্বাচনকে প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুর জন্য কঠিন পরীক্ষা বলে মনে করা হচ্ছিল। কারণ, চীনপন্থী মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হলেও পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ ছিল তাঁর পূর্বসূরি ভারতপন্থী ইব্রাহিম মোহামেদ সালেহর দল মালদিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) হাতে। ফলে চীনপন্থী মুইজ্জুর দল পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে কি না, এটাকে তাঁর জন্য চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছিল।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভারতবিরোধী অবস্থান প্রকাশ করে বিজয়ী হন মোহামেদ মুইজ্জু। তিনি মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের মতো চীনপন্থী অবস্থান নেন। দুর্নীতির অভিযোগে ইয়ামিনের ১১ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। তবে গত সপ্তাহে আদালত এ সাজা বাতিল করলে তিনি মুক্তি পান।
চলতি মাসে যখন পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য পুরোদমে প্রচারণা চলছিল, তখন মালদ্বীপে অবকাঠামো নির্মাণে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বড় ধরনের চুক্তি করেছেন মুইজ্জু। তাঁর প্রশাসন মালদ্বীপে থাকা ভারতীয় সেনাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুইজ্জুর একজন জ্যেষ্ঠ সহকারী এএফপিকে বলেন, এবারের নির্বাচনের প্রচারে ভূরাজনীতির একটি বড় ধরনের প্রভাব ছিল। ভারতীয় সেনাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে তিনি (মুইজ্জু) ক্ষমতায় এসেছেন এবং তিনি এ নিয়ে কাজ করছেন।
মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হলেও পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় বিরোধী পক্ষের আইনপ্রণেতাদের আপত্তিতে তাঁর মনোনীত তিনজনের মন্ত্রিসভায় যোগদান আটকে যায়। মুইজ্জু প্রস্তাবিত কয়েকটি বিল পাসেও আপত্তি জানান বিরোধীরা। এখন পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ায় মুইজ্জুর সরকারের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে।