থাইল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৩৭ বছর বয়সী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে আনুষ্ঠানিক নিয়োগ দিলেন দেশটির রাজা। পেতংতার্ন বিতর্কিত সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী ও ধনকুবের থাকসিনের মেয়ে।
আজ রোববার ব্যাংককের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টার পর সাবেক থাকসিনপন্থী একটি টেলিভিশন স্টেশনের সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাজা মাহা ভাজিরালংকর্নের কাছ থেকে সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক চিঠি গ্রহণ করেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্রেথা থাভিসিনকে গত বুধবার সাংবিধানিক আদালত পদচ্যুত করেন। এর দুদিন পর গত শুক্রবার পেতংতার্নকে নতুন ও সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছে দেশটির পার্লামেন্ট।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনদের মধ্যে পেতংতার্নের বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রাও (৭৫) উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানস্থলে সম্মুখসারিতে পেতংতার্নের স্বামীর পাশে ছিলেন তিনি।
আইনপ্রণেতাদের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর পেতংতার্ন স্বীকার করেন, তাঁর অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে। তবে সব থাই নাগরিকের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে ও তাঁদের ক্ষমতাবান করার চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি আছেন তিনি।
সিনাওয়াত্রা পরিবার থেকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হওয়া তৃতীয় ব্যক্তি হলেন পেতংতার্ন। তবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাবা ও ফুফুর মতো পরিণতি বরণ করা এড়াতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। তাঁরা দুজনই সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন।
ফিউ থাই পার্টির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের নেতৃত্ব দেবেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। দলটির প্রতিষ্ঠাতা তাঁর বাবা থাকসিন। জোটে সেনা–সমর্থিত কিছু দলও থাকছে; যারা দীর্ঘদিন ধরে বিরোধিতা করেছে থাকসিনের।
ফিউ থাই পার্টির নেতা স্রেথা থাভিসিনকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণে পার্লামেন্টের ৪০ জন সিনেটর একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন। চলতি বছর সাংবিধানিক আদালতের বিচারকেরা ৬–৩ ভোটে পিটিশনটি গ্রহণ করেন।
স্রেথার বিরুদ্ধে অভিযোগ, দুর্নীতি ও আদালত অবমাননার দায়ে ২০০৮ সালে ছয় মাসের কারাদণ্ড পাওয়া সাবেক আইনজীবী পিচিট চুয়েনবানকে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন তিনি।
পরে বুধবার স্রেথাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অপসারণ করেন ব্যাংককের সাংবিধানিক আদালত। গত ১৬ বছরের মধ্যে তিনি হলেন থাইল্যান্ডের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী, যাঁকে সাংবিধানিক আদালত ক্ষমতাচ্যুত করেন।
স্রেথার অপসারণের পর শুক্রবার সহজেই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন পেতংতার্ন। কেননা, পার্লামেন্টের ৪৯৩ আসনের মধ্যে তাঁর দল ও জোটের আসন ৩১৪। প্রধানমন্ত্রী হতে আইনপ্রণেতাদের অন্তত অর্ধেকসংখ্যকের সমর্থন প্রয়োজন ছিল তাঁর। পার্লামেন্টে ওই দিন অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে পেতংতার্নের পক্ষে ৩১৯টি ভোট পড়ে, আর বিপক্ষে পড়ে ১৪৫টি।
আইনপ্রণেতাদের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর পেতংতার্ন স্বীকার করেন, তাঁর অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে। তবে সব থাই নাগরিকের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে ও তাঁদের ক্ষমতাবান করার চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি আছেন তিনি।