রনিলের পরিণতি গোতাবায়ার চেয়েও ভয়ংকর হবে: সাবেক এমপি

রনিল বিক্রমাসিংহে
রয়টার্স ফাইল ছবি

শ্রীলঙ্কার সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য এবং সমাজি ভানিথা বলভেগেয়া পার্টির প্রধান হিরুনিকা প্রেমাচন্দ্র বলেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের পরিণতি সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের চেয়েও ভয়ংকর হবে। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিররের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

শ্রীলঙ্কার বিরোধী নেতা সাজিদ প্রেমাদাসার দল সমাজি জন বলভেগেয়ার নারীবিষয়ক অঙ্গসংগঠন সমাজি ভানিথা বলভেগেয়া। হিরুনিকা প্রেমাচন্দ্র–এর নেতৃত্বে আছেন। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে হিরুনিকা বলেন, শিগগিরই রনিলকে বিদায় নিতে হবে। সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের চেয়েও তাঁর বিদায় অনেক বেশি আতঙ্কের হবে। তাঁকে দ্রুতই ক্ষমতাচ্যুত এবং জেলে যেতে হবে।

আরেকটি অভ্যুত্থানের জন্য জনগণ প্রস্তুত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রেমাচন্দ্র বলেন, অসহায় মানুষেরা প্রধান প্রধান ব্যবসায়ীদের বাড়িগুলো জ্বালিয়ে দেবে। সহায়সম্বলহীন গরিব মানুষেরা ধনীদের সম্পদ দখল করবে। ইতিমধ্যে ধনীদের মালিকানাধীন সম্পদের দখল শুরু হয়ে গেছে। কয়েক দিন আগে বাট্টারামুল্লাতে এক ধনী ব্যক্তির বাড়ি থেকে কিছু জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

প্রেমালাল জয়সেকেরাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হিরুনিকা প্রেমাচন্দ্র। তিনি বলেন, ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি এ জয়সেকেরাই এক সমাবেশে ইউএনপি সমর্থক দোদানগোদাকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত। ইউএনপি কীভাবে তাঁকে মন্ত্রী করার পদক্ষেপ মেনে নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হিরুনিকা।

ব্রিটেনের সদ্যপ্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বিক্রমাসিংহের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কা কোনোভাবে লাভবান হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

চরম অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে এ বছরের শুরু থেকে শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভ শুরু হয়। গত ৯ জুলাই শত শত বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়েন। এর কিছুক্ষণ আগে সামরিক বাহিনীর সহযোগিতায় সেখান থেকে পালিয়ে যান গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এর কয়েক দিনের মাথায় তিনি দেশত্যাগ করেন। গণবিক্ষোভের মুখে ১৩ জুলাই শ্রীলঙ্কা থেকে পালিয়ে প্রথম মালদ্বীপে যান গোতাবায়া রাজাপক্ষে। পরদিন মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুরে যান তিনি। সিঙ্গাপুরে গিয়ে তিনি তাঁর পদত্যাগপত্র দেশে পাঠিয়ে দেন। ১৫ জুলাই তাঁর আনুষ্ঠানিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার।

সিঙ্গাপুর থেকে থাইল্যান্ডে যান গোতাবায়। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন তিনি। গোতাবায়া যখন বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তখন শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী ও রাজনীতিকদের একটি দল তাঁকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।