ভারত গত পাঁচ বছরে মোট বৈশ্বিক অস্ত্র বাণিজ্যের ১১ শতাংশ অস্ত্র আমদানি করেছে। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সৌদি আরব, দেশটি ৯ দশমিক ৬ শতাংশ অস্ত্র আমদানি করেছে
বিশ্বে গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আমদানি করেছে ভারত। যদিও আগের পাঁচ বছরের (২০১২–১৬) চেয়ে গত পাঁচ বছরে (২০১৭–২০২১) দেশটির অস্ত্র আমদানি ২১ শতাংশ কমেছে। আর গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৈশ্বিক সামরিক ব্যয়, সশস্ত্র সংঘাত ও অস্ত্র বাণিজ্য নিয়ে তথ্য বিশ্লেষণকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। গত সোমবার প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালের এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ভারতের সামরিক বাহিনী অনেক বড়। অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম আরও কয়েক বছর চলবে। আর অস্ত্রের আমদানি কমে যাওয়া ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। দেশের সামরিক খাত সফল হলে আমদানি আরও কমবে।এয়ার মার্শাল (অব.) অনিল চোপড়া, মহাপরিচালক, সেন্টার ফর এয়ার পাওয়ার স্টাডিজ
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত পাঁচ বছরে ভারত মোট বৈশ্বিক অস্ত্র বাণিজ্যের ১১ শতাংশ অস্ত্র আমদানি করেছে। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সৌদি আরব, দেশটি ৯ দশমিক ৬ শতাংশ অস্ত্র আমদানি করেছে। এরপর যথাক্রমে আছে কাতার (৬ দশমিক ৪ শতাংশ) এবং চীন (৪ দশমিক ৭ শতাংশ) ও অস্ট্রেলিয়া (৪ দশমিক ৭ শতাংশ)। শেষ পাঁচ বছরে ভারতের অস্ত্র আমদানি কমার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, দেশটি নিজেই অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম তৈরির কাজে মনোযোগ দিয়েছে।
সেন্টার ফর এয়ার পাওয়ার স্টাডিজের মহাপরিচালক এয়ার মার্শাল (অব.) অনিল চোপড়া বলেন, ভারতের সামরিক বাহিনী অনেক বড়। অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম আরও কয়েক বছর চলবে। আর অস্ত্রের আমদানি কমে যাওয়া ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। দেশের সামরিক খাত সফল হলে আমদানি আরও কমবে।
এসআইপিআরআই এর প্রতিবেদন বলছে, গত পাঁচ বছরে অস্ত্র রপ্তানিতে শীর্ষ দেশ যুক্তরাষ্ট্র (৪০ শতাংশ)। এর পরে রয়েছে রাশিয়া (১৬ শতাংশ), ফ্রান্স (১১ শতাংশ), চীন (৫ শতাংশ) ও জার্মানি (৪ শতাংশ)।
প্রতিবেদন মতে ২০২২ সালে ইউরোপে অস্ত্র আমদানি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশটিতে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের সমাবেশ ঘটায় এই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে।
যা ইউক্রেনকে বিশ্বের তৃতীয় অস্ত্র সমাবেশের দেশে পরিণত করেছে। ইউরোপে আগের (২০২১) বছরের চেয়ে গত বছর অস্ত্র আমদানি প্রায় ৯৩ শতাংশ বেড়েছে। পোল্যান্ড ও নরওয়েসহ ইউরোপের দেশগুলো অস্ত্র আমদানি বাড়িয়ে দেওয়ায় এ মহাদেশে অস্ত্র আমদানি এই পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইউরোপে অস্ত্র আমদানির হার আরও বাড়তে পারে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ইউরোপে যত অস্ত্র এসেছে, তার ৩১ শতাংশই পৌঁছেছে ইউক্রেনে। পুরো বিশ্বের কথা বিবেচনা করলে এটা হয় ৮ শতাংশ।
ইউক্রেনে সমাবেশ ঘটা অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ২৩০ আর্টিলারি সরঞ্জাম, ২৮০ পোলিশ সাঁজোয়া যান এবং যুক্তরাজ্যের ৭ হাজারেরও বেশি ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও নতুন তৈরি বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।
এসআইপিআরআইয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষক পিটার ওয়েজম্যান বলেন, রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানের কারণে ইউরোপের দেশগুলোতে অস্ত্রের আমদানি বেড়েছে। সামনে এটা আরও বাড়তে পারে।
সূত্র: এএফপি ও হিন্দুস্তান টাইমস।