বুকারজয়ী ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যেই ব্যক্তি হামলা করেছিলেন, তাঁকে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দিয়েছে ইরানের একটি প্রতিষ্ঠান। পুরস্কার হিসেবে হামলাকারী পাচ্ছেন এক হাজার বর্গমিটার কৃষিজমি। ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আজ মঙ্গলবার এ তথ্য প্রচার করেছে।
গত বছরের আগস্টে নিউইয়র্কের শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানমঞ্চে কথা বলছিলেন সালমান রুশদি। এ সময় তাঁর ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ হামলায় ৭৫ বছর বয়সী রুশদি প্রাণে বাঁচলেও গুরুতর আহত হন। একটি চোখ হারান তিনি। তাঁর একটি হাতও কর্মক্ষমতা হারায়।
এ ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ ২৪ বছর বয়সী শিয়া মুসলিম হাদি মাতারকে আটক করে। হাদির বিরুদ্ধে রুশদিকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আজ ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সালমান রুশদির ওপর হামলা চালিয়ে হাদি মাতার সাহসী একটি কাজ করেছেন বলে মনে করছে ইরানের ফাউন্ডেশন টু ইমপ্লিমেন্ট ইমাম খামেনি’স ফতোয়াস। রুশদির একটি চোখ অন্ধ হওয়ায় ও তাঁর একটি হাত কর্মক্ষমতা হারানোয় বিশ্বজুড়ে মুসলিমরা খুশি হয়েছে। তাই হাদিকে পুরস্কার দেবে সংগঠনটি।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বিভিন্ন সময় দেওয়া ফতোয়া বাস্তবায়নে কাজ করে এ সংগঠন। সংগঠনের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইসমাইল জারেই জানান, তাঁদের সংগঠনের পক্ষ থেকে হাদি মাতারকে কিংবা তাঁর আইনি কোনো প্রতিনিধিকে ইরানে এক হাজার বর্গমিটার কৃষিজমি উপহার দেওয়া হবে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত বুকার পুরস্কারজয়ী ব্রিটিশ লেখক রুশদি ১৯৮১ সালে তাঁর লেখা বই ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। কিন্তু ১৯৮৮ সালে তাঁর চতুর্থ বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জন্য তাঁকে ৯ বছর লুকিয়ে থাকতে হয়।
‘স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে বলে মনে করেন মুসলিমরা। এটি প্রকাশের পর থেকে রুশদি হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন।
বইটি প্রকাশের এক বছর পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেন। সেই সঙ্গে তাঁর মাথার দাম হিসেবে ৩০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন।
২০১৯ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি টুইটে বলেন, রুশদির বিরুদ্ধে দেওয়া তিন দশকের পুরোনো সেই ফতোয়া এখনো ‘অপরিবর্তনীয়’ রয়েছে। এমন আক্রমণাত্মক মন্তব্যের পর তাঁকে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে বহিষ্কার করে টুইটার কর্তৃপক্ষ।