ফিলিপাইনে বিপন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক কচ্ছপের মাংস খেয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ৩২ জন। মাগুইন্দানাও দেল নর্তে প্রদেশের সমুদ্রতীরবর্তী একটি শহরে গত সপ্তাহে এ ঘটনা ঘটে।
কর্মকর্তারা বলেন, রান্না করা ওই মাংস খেয়ে আদিবাসী টেডুরাই সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন ডায়রিয়া, বমি ও পেটব্যথায় ভুগেছেন।
ফিলিপাইনের পরিবেশ সুরক্ষা আইনে সামুদ্রিক কচ্ছপ শিকার ও খাওয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু এখনো দেশটির কিছু আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাছে সামুদ্রিক প্রাণী খাওয়া তাদের ঐতিহ্য।
সুস্থ দেখা গেলেও কিছু সামুদ্রিক কচ্ছপ দূষিত শৈবাল খায়। আর এগুলো রান্নার পরও সেই বিষ থেকে যাতে পারে এবং খাওয়ার পরও বিষক্রিয়া হতে পাতে।
স্থানীয় একজন কর্মকর্তা ইরেনে দিলো বিবিসিকে বলেন, ওই একই কচ্ছপ খেয়ে কিছু কুকুর, বিড়াল ও মুরগিও মারা গেছে। এসব মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ফিলিপাইনের একটি জনপ্রিয় খাবার হলো আদাবো। এটি অল্প তাপে ভিনেগার ও সয়া সস দিয়ে রান্না করা মাংস ও সবজি।
উপকূলীয় শহর দাতো ব্লাহ সিনসুয়াতের বাসিন্দারা সমুদ্র থেকে তাঁদের খাবার সংগ্রহ করে থাকেন। কর্মকর্তা ইরেনে দিলো বলেন, বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কারণ, তাঁদের গ্রামে লবস্টার, মাছসহ নানা ধরনের সামুদ্রিক খাবারের প্রাচুর্য রয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বেশির ভাগই ছাড়া পেয়েছেন। মারা যাওয়া তিনজনকে স্থানীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী এক সারিতে কবর দেওয়া হয়।
স্থানীয় কাউন্সিলর দাতু মোহাম্মদ সিনসুয়াত জুনিয়র বলেন, তিনি স্থানীয় কর্মকর্তাদের ওই অঞ্চলে কেউ যাতে সামুদ্রিক কচ্ছপ শিকার করতে না পারে, সে জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বলেছেন। এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না বলেও তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।
বেশির ভাগ সামুদ্রিক কচ্ছপ এখন বিপন্ন প্রজাতির। এগুলো ধরা, ক্ষতি করা বা হত্যা করা অবৈধ। তারপরও কিছু সম্প্রদায়ের মানুষ কচ্ছপের মাংস ও ডিমের জন্য এগুলোকে শিকার করে। তারা মনে করে, এর মধ্যে ঔষধি গুণ রয়েছে।
২০১৩ সালে ফিলিপাইনের ইস্টার্ন সামার প্রদেশের একটি গ্রামের কাছে সামুদ্রিক একটি কচ্ছপ দেখে এটিকে ধরে খেয়ে নেন গ্রামবাসী। এতে ৬৮ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। মারা যান চারজন।