ঘূর্ণিঝড় মোখায় মিয়ানমারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০–এ দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয় নেতারা ও সামরিক জান্তা–সমর্থিত একটি গণমাধ্যম এ হিসাব দিয়েছে। গত রোববার অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমার ও বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানে।
মিয়ানমারের আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় মোখা যখন দেশটির উপকূলে প্রবেশ করে, তখন এর গতি ছিল প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৯৫ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড় মোখায় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যে অন্তত ৪১ জন মারা গেছেন। এসব মানুষ বু মা ও এর পাশের খাউং দোকে কার নামের দুটি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। বিধ্বস্ত জনপদে পরিণত গ্রাম দুটিতে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা বাস করেন।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভি জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে রাখাইনের রাজধানী সিত্তের অদূরে এক গ্রামে একটি বৌদ্ধ মঠ ভেঙে ১৩ জন প্রাণ হারান। এ ছাড়া এর পাশের আরেকটি গ্রামে ভবন ধসে এক নারীর মৃত্যু হয়।
সিত্তের অদূরের ওই গ্রামটির নাম বু মা। সেই গ্রামের গ্রামপ্রধান কারলো বললেন, ‘মৃত্যুর সংখ্যাটা আরও বেশি হতে পারে। কারণ, এখনো শতাধিক মানুষ নিখোঁজ।’
আবুল হুসেন (৬৬) নামের এক ব্যক্তি তাঁর মেয়ের কবরে গিয়ে প্রার্থনা করছিলেন। মঙ্গলবার সকালে আবুল হুসেনের মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের সময় আমি অসুস্থ ছিলাম। এ জন্য নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে পারিনি। যখন আমরা নিরাপদ স্থানে যাওয়ার কথা ভাবছিলাম, তখন ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে।’
মোখা এই অঞ্চলে গত এক দশকের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। এর আঘাতে বহু বাড়িঘর ভেঙেছে বা বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছ। এতে রাখাইনের বেশির ভাগ এলাকা যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
২০০৮ সালের ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের আঘাতে মিয়ানমারে ইরাবতী নদীর ডেল্টার আশপাশের জনবহুল এলাকাগুলো ধ্বংস হয়। এতে অন্তত ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যান। কয়েক হাজার বাড়িঘর এবং অন্যান্য স্থাপনা পানিতে ভেসে যায়।