থাইল্যান্ডের গণতন্ত্রপন্থী প্রধান দুই বিরোধী দল জোট সরকার গঠনের বিষয়ে একমত হয়েছে। গতকাল সোমবার দল দুটির পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। জোট সরকারে আরও চারটি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর আগে গত রোববারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিরোধী মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি (এমএফপি) ও ফেউ থাই পার্টির কাছে ধরাশায়ী হয় সেনা-সমর্থিত ক্ষমতাসীন দল ইউনাইটেড থাই নেশন পার্টি।
রোববারের নির্বাচনে বিস্ময়কর সাফল্য পেয়েছে এমএফপি। তারুণ্যনির্ভর দলটি ৫০০ আসনের নিম্নকক্ষে সর্বোচ্চ ১৫১ আসন পেয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাসিত নেতা থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার ফেউ থাই পেয়েছে ১৪১ আসন। অবশ্য জনমত জরিপে ফেউ থাইকে এগিয়ে রাখা হয়েছিল। নির্বাচনী ফলাফলে পঞ্চম হয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
থাইল্যান্ডের পার্লামেন্ট দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে রয়েছে ৫০০ আসন। আর উচ্চকক্ষ সিনেটে রয়েছে ২৫০টি আসন। সিনেট সদস্যরা সেনা-সমর্থিত সরকারের নিয়োগ দেওয়া। নতুন সরকার গঠনে সিনেটের প্রভাব থাকবে। জেনারেলদের নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল দলগুলোর পক্ষ নেওয়ার নজির আছে তাঁদের।
দুই কক্ষ মিলিয়ে সরকার গঠনে প্রয়োজন হবে ৩৭৬টি আসন। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৩০৯টি আসন নিশ্চিত করতে পেরেছেন বিরোধী দল এমএফপির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী পিটা লিমজারোয়েনরাত। ফলে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে বিরোধীদের।
সামনে সিনেট ‘বাধা’
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালে থাইল্যান্ডে একটি নির্বাচন হয়েছিল। তবে ওই নির্বাচনের ফলাফলে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। কয়েক সপ্তাহ পর সেনা-সমর্থিত একটি দল সরকার গঠন করে এবং প্রাউত চান-ওচাকে তাদের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। প্রক্রিয়াটিকে অন্যায্য উল্লেখ করে তখন ক্ষোভ জানিয়েছিল বিরোধী দল।
ফলে দুই কক্ষ মিলিয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত না হওয়ায় সরকার গঠনে আর কিছু পথ পাড়ি দিতে হবে বিরোধীদের। এ ক্ষেত্রে নতুন সরকার গঠনে সেনা-সমর্থিত সরকার প্রভাবিত সিনেট সদস্যদের ভোট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
সিনেটের বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে লিমজারোয়েনরাত, সব পক্ষকে নির্বাচনের ফলাফলকে সম্মান করতে হবে এবং এর বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো লাভ নেই। তিনি বলেন, ‘আমি এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নই; তবে উদাসীন হয়ে বসেও নেই।’
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী বলেন, ‘কেউ যদি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল বা সংখ্যালঘু সরকার গঠনের কথা ভেবে থাকে, তবে এ জন্য অনেক বেশি মূল্য চোকাতে হবে।’