মালয়েশিয়াতে বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে বিল পাস

মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট ভবন
ছবি: রয়টার্স

মালয়েশিয়ায় বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে বিল পাস করেছে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ। সংস্কার বিলটি এখন সিনেট থেকে পাস হয়ে আসতে হবে। আশা করা হচ্ছে, বড় ধরনের বিরোধিতা ছাড়াই বিলটি পাস হবে।

মানবাধিকারকর্মীরা বিষয়টিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করে স্বাগত জানিয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় ৩৪ ধরনের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে এর মধ্যে হত্যা, মাদক পাচার, সন্ত্রাসসহ ১১টি গুরুতর অভিযোগের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

এএফপির খবরে বলা হয়, এই বিলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করা হয়নি। তবে তা বাধ্যতামূলক নয়। এখন বিচারক চাইলে কিছু শর্ত সাপেক্ষে অপরাধীকে ৩০ থেকে ৪০ বছরের কারাদণ্ডও দিতে পারবেন।

মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার সময় উপ-আইনমন্ত্রী রামকারপাল সিং বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষের জীবনের অন্তর্নিহিত অধিকারের অস্তিত্বকে আমরা উপেক্ষা করতে পারি না।’

২০১৮ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ওপর স্থগিতাদেশ রয়েছে। কিন্তু আদালত মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ফিল রবার্টসন এই ভোটকে মালয়েশিয়ার অগ্রগতির জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আশা করেন, মালয়েশিয়ার এ পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশকে এ ধরনের উদ্যোগ নিতে চাপে ফেলবে।

উল্লেখ্য, কম্বোডিয়া ও ফিলিপাইনই একমাত্র আসিয়ানভুক্ত দেশ, যারা মৃত্যুদণ্ড পুরোপুরি বাতিল করেছে।

অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্কের নির্বাহী সমন্বয়ক ডোবি চিও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের কাছে যে উপাত্ত আছে, তাতে দেখা গেছে, মৃত্যুদণ্ড কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি।’

বিবিসির খবরে বলা হয়, গত জুনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবের সরকার বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন থেকেই এ আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়। আইন সংস্কারের দুটি বিল গত সপ্তাহে সংসদে পেশ করা হয়েছে।

মালয়েশিয়াসহ ৫৩টি দেশে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এই অঞ্চলের অন্য দুটি দেশ হলো চীন ও সিঙ্গাপুর।

এএফপির খবরে বলা হয়, সিঙ্গাপুরে গত বছর মাদক পাচারের দায়ে ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।  

মিয়ানমারের জান্তা সরকারও এক দশকের দীর্ঘ বিরতির পর দেশটিতে আবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া শুরু করেছে।