যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে সামরিক কারাগার থেকে ১৮ বছর পর দেশে ফিরেছেন মালয়েশিয়ার দুই নাগরিক। তাঁরা হলেন মোহাম্মদ ফারিক বিন আমিন ও মোহাম্মদ নাজির বিন লেপ। বুধবার রাতে তাঁরা মালয়েশিয়ায় ফেরেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বেরনামা।
বেরনামার খবরে বলা, মালয়েশিয়ার পুলিশের মহাপরিদর্শক রাজারুদিন হুসাইন বলেছেন, দেশে ফেরার পর মোহাম্মদ ফারিক ও মোহাম্মদ নাজিরের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে। দীর্ঘদিন পর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একত্র হতে পেরে তাঁরা খুশি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ২০০২ সালে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছিলেন ফারিক ও নাজির। ওই হামলায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সমাজে ফেরার আগে দুজনকে পুনর্বাসন ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
গুয়ান্তানামো বে কারাগার থেকে দুজনকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর কথা উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলেছে, এই দুজন কারাবন্দীর সহযোগিতার মনোভাব ছিল এবং তাঁরা বালি বোমা হামলার হোতা হিসেবে অভিযুক্ত এনসেপ নূরজামানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। নূরজামান ‘হামবালি’ নামে বেশি পরিচিত।
এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে কেনিয়ার এক নাগরিককে গুয়ান্তামো বে কারাগার থেকে নিজ দেশে ফেরানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। মোহাম্মদ আবদুল মালিক বাজাবু নামের ওই ব্যক্তিকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই ১৭ বছর বন্দী রাখা হয়েছিল। গত মঙ্গলবার তিনি কেনিয়া ফেরেন। ২০০৭ সালে তাঁকে দেশটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ হামলার সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। হামলার পর শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন মুসলিম। গ্রেপ্তার করা এই ব্যক্তিদের অনেককে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর গোপন বন্দিশালায় রাখা হয়। সেখানে বুশ প্রশাসনের অনুমোদনে তাঁদের ওপর জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন চালানো হতো।
পরে এই ব্যক্তিদের গুয়ান্তানামো বে কারাগারে পাঠানো হয়। ৯/১১ হামলার পর দক্ষিণ কিউবায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে কারাগারটি স্থাপনের সময় সেখানে সর্বোচ্চ ৮০০ বন্দী ছিলেন। সর্বশেষ মালয়েশিয়ার দুই নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার পর এখনো কারাগারটিতে ২৭ জন বন্দী রয়েছেন।