নারীদের বিষয়ে সবচেয়ে নিপীড়নকারী দেশ আফগানিস্তান: জাতিসংঘ

বোরকা পরিহিত আফগান নারী
ফাইল ছবি: রয়টার্স

নারী অধিকার বিষয়ে তালেবান সরকারের অধীনে আফগানিস্তান হলো ‘বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়নকারী দেশ’। সেখানে নিয়মের বেড়াজালে নারী ও মেয়েদের ঘরে আটকে রাখা হয়। আজ বুধবার জাতিসংঘ এ মন্তব্য করে।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ মিশনের প্রধান রোজা ওতুনবায়েভা এক বিবৃতি দেন। সেখানে বলা হয়, চোখের সামনে আফগান নারী ও মেয়েদের অন্য সবার থেকে আলাদা করে দিতে তাদের (কর্তৃপক্ষ) পদ্ধতিগত, ইচ্ছাকৃত এবং নিয়মতান্ত্রিক যে প্রচেষ্টা, তা দেখা দুঃখজনক।

জাতিসংঘ মিশন বলছে, আফগানিস্তান যখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি তখন এই দমন–পীড়ন ‘জাতীয় আত্মঘাতী’ পদক্ষেপ ছাড়া আর কিছু নয়।

তালেবান কর্তৃপক্ষ যেসব সরকারি চাকরিতে নারী থাকা অপরিহার্য, সেসব জায়গা ছাড়া অন্য সব ক্ষেত্র থেকে নারীদের সরিয়ে দিয়েছে। আবার কাউকে কাউকে বাড়িতে থাকার জন্য আগের বেতনের একটি অংশ দিচ্ছেন।

নারীদের পার্ক, বিনোদনকেন্দ্র, ব্যায়ামাগার, সরকারি গোসলখানা নিষিদ্ধ করা হয়েছে—এমনকি নারীদের প্রকাশ্যে আসতে হলে মেয়েদের বোরকা পরে আসা বাধ্যতামূলক করা হয়। কিশোরী ও নারীদের জন্য স্কুল ও উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ করে তাদের ওপর সবচেয়ে বড় দমন–পীড়ন চালায়।

এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ফলে তাঁদের গ্রেপ্তার হওয়ার ঝুঁকি, সহিংসতা ও সামাজিক কলঙ্কের ভয় আছে।  

এএফপি সাংবাদিকেরা দেখেছেন, বুধবার প্রায় ২০ জন নারী কাবুলের একটি রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন, যা বিরল। তাঁরা আফগানদের রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একজন বিক্ষোভকারী একটি বিবৃতি পাঠ করেন। সেখানে বলা হয়, ‘আফগান জনগণের ভাগ্য নির্ধারণে জাতিসংঘের একটি নিষ্পত্তিমূলক এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।’

দাতা সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, তালেবান ক্ষমতায় আসার পর এখনো কোনো দেশ তাদের স্বীকৃতি দেয়নি। ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষের দেশটির অর্ধেকের বেশি মানুষ খাদ্যাভাবের মধ্যে রয়েছে। প্রায় ৪০ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। গত বছর দেশটির কর্তৃপক্ষ বেসরকারি সংস্থাগুলোতে নারীদের কাজ করা নিষিদ্ধ করে। এমনকি কয়েকটি দাতা সংস্থাকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করে।

তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের শত শত কোটি ডলার জব্দ করে। এতে দেশটিতে বিদেশি সাহায্যও নাটকীয়ভাবে কমে যায়, যা সংকটকে আরও বাড়িয়ে তোলে।