মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ রাজ্যে গত ১৫ মাসে দেশটির জান্তার প্রায় ১ হাজার ৫০০ সেনা নিহত হয়েছেন। একই সময়ে রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১৫০ জনের বেশি প্রতিরোধযোদ্ধা নিহত হয়েছেন। খবর দ্য ইরাবতির
অঞ্চলটিতে গত বছরের মে মাসে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু হয়। এর পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই কায়াহ রাজ্যে তীব্র গোলাগুলির পাশাপাশি বিমান ও ভারী কামানের গোলা হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
দ্য কারেনি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ), দ্য কারেনি আর্মিসহ (কেএ) বেশ কয়েকটি পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) কায়াহজুড়ে জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। একই ধরনের প্রতিরোধ লড়াই চলছে প্রতিবেশী দক্ষিণাঞ্চলীয় শান রাজ্যে।
প্রগ্রেসিভ কারেনি পিপল ফোর্স (পিকেপিএফ) নামের একটি গোষ্ঠী মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করে। পিকেপিএফ গত বৃহস্পতিবার জানায়, গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কায়াহ রাজ্যে ১ হাজার ৪৯৯ জান্তা সেনা নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে প্রতিরোধযোদ্ধা নিহত হয়েছেন ১৫১ জন। এ সময়ে এলাকাটিতে ৪৫৪টি লড়াই হয়।
একই সময়ে রাজ্যটিতে জান্তা বাহিনী বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু ও প্রতিরোধ বাহিনীর ওপর প্রায় ১৫৮টি বিমান হামলা চালিয়েছে।
পিকেপিএফ আরও বলেছে, গত ১৫ মাসে কায়াহ রাজ্যে ২৬১ বেসামরিক ব্যক্তি ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ৬১ ব্যক্তি জান্তার হাতে নিহত হয়েছেন। জান্তা কর্তৃপক্ষ এ সময়ে ২৬১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পিকেপিএফের ভাষ্যমতে, জান্তার বিমান-কামান হামলার পাশাপাশি অগ্নিসংযোগের কারণে রাজ্যের ১ হাজার ১৮০টি বাড়ি ও ২৫টি ধর্মীয় ভবন ধ্বংস হয়েছে।
রাজ্যটিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখ। রাজ্যের বাস্তুচ্যুত মানুষ এখন খাদ্যসংকটের মুখোমুখি। কারণ, জান্তা কর্তৃপক্ষ খাদ্য সরবরাহের রুট বন্ধ করে দিয়েছে।
সেন্ট্রাল রিজিয়ন স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ কায়াহ রাজ্যে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ লড়াইয়ে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। তারা গত শুক্রবার জানায়, ১৬ থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে কায়াহ রাজ্যে কেএনডিএফ, কেএ, পিডিএফসহ সম্মিলিত প্রতিরোধ বাহিনীর ১৪টি অতর্কিত হামলায় ৬১ জান্তা সেনা নিহত হয়েছেন।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা কায়াহ রাজ্যে বিপুলসংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছে। তাঁরা গ্রামে গ্রামে অভিযান চালাচ্ছেন। প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধেও তাঁরা অভিযান চালাচ্ছেন।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান হয়। অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সরকারকে উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক জান্তা।