২০২৪ সালে সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং
২০২৪ সালে সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং

নোবেল পুরস্কার নিলেন হান কাং, বললেন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে

দক্ষিণ কোরিয়ার লেখিকা হান কাং নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। সাহিত্যে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের কনসার্ট হলে ১০ ডিসেম্বর আয়োজিত এক স্মারক অনুষ্ঠানে সুইডেনের রাজা ষোড়শ কার্ল গুস্তাফের কাছ থেকে নোবেল পুরস্কার পদক ও সনদ নিয়েছেন তিনি।

পুরস্কার নেওয়ার পরে দেওয়া বক্তব্যে হান কাং দক্ষিণ কোরিয়ার সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য জারি করা সামরিক শাসন নিয়ে তাঁর ভাবনা জানান। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন।

শান্তির নোবেল পুরস্কার নরওয়ের রাজধানী অসলোতে দেওয়া হলেও অন্য সব কটি বিভাগের পুরস্কার সুইডেনে দেওয়া হয়। ১০ ডিসেম্বরের একই অনুষ্ঠানে হান কাংয়ের পাশাপাশি এবারের আরও ১০ জন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী উপস্থিত ছিলেন। তবে এশিয়ার প্রথম নারী হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হওয়ায় হান কাংয়ের উপস্থিতি অনেকের নজর কেড়েছে। এমন এক সময়ে তিনি পুরস্কার নিলেন, যখন তাঁর দেশে প্রেসিডেন্টের জারি করা সংক্ষিপ্ত সময়ের সামরিক শাসন নিয়ে চলছে উত্তাল অবস্থা।

হান কাং দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। এর আগে ২০০০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট কিম দে-জুং শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে হান কী বলেন, সেদিকে অনেকেই নজর রেখেছেন।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের পরে বিশেষ ভোজসভার আয়োজন করা হয়। এর আগে দেওয়া বক্তব্যে সাহিত্য ও নিজের ভাবনার কথা জানান হান কাং। বক্তব্যে তিনি সামরিক শাসন মানুষের জীবনকে কতটা বিপর্যস্ত করে তোলে, সে ইঙ্গিত দেন। তিনি ১৯৮০ সালে সামরিক শাসনাধীন দক্ষিণ কোরিয়ায় কয়েক শ গণতন্ত্রপন্থী জনতাকে নির্মমভাবে হত্যার কথা উল্লেখ করেন। ২০২৪ সালে এসে একই ধরনের ঘটনা ঘটে যাওয়ার প্রক্রিয়া বিস্ময়কর বলে অভিহিত করেন।

হান কাং শৈশবের একটি ঘটনার উল্লেখ করেন। বলেন, আট বছর বয়সে একদিন হঠাৎ করে শুরু হয়ে যাওয়া বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে একটি ভবনের ছাদের নিচে আশ্রয় নিয়েছিলেন। একই জায়গায় আশ্রয় নেন আরও কয়েকজন। তখন তাঁর মনে হয়, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ানো সবাই নিজেদের চলার পথে তাঁর মতোই নিজস্ব অধিকার নিয়ে বেঁচে আছেন।

সেদিন হানের মনে প্রশ্ন জাগে, ‘বেঁচে থাকা ও জন্ম নেওয়ার কারণ কী? এই পৃথিবীতে সংক্ষিপ্ত অস্তিত্বের অর্থ কী? জীবনে যা কিছু ঘটে না কেন, সেই আবর্তে মানবসত্তা বজায় রাখা কতটা কঠিন?’

সমস্ত জীবন ধরে হান সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তাঁর উপন্যাসের মূলেও এ প্রশ্ন খুঁজে পাওয়া যায়।