জাপানের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের ফুকুওকায় একটি কিন্ডারগার্টেনে কয়েক দিন ধরে শিশুদের জুতা খোয়া যাচ্ছিল। এ কাণ্ডে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা উদ্বেগের মধ্যে পড়ে যান। তাঁরা ধারণা করেন, কোনো ব্যক্তি হয়তো অসৎ উদ্দেশ্যে জুতা চুরি করছে। পরে পুলিশের সহায়তায় নিরাপত্তা ক্যামেরায় (সিসিটিভি) ধরা পড়ে, কোনো মানুষের কাজ নয়, বেজি এ কাণ্ড ঘটাচ্ছে।
প্রথাগতভাবে জাপানের মানুষ জুতা খুলে ঘরে প্রবেশ করেন। যে জুতাগুলো চুরি যাচ্ছিল সেগুলো চটি, শিশুরা ঘরের ভেতর পরে। ঘরের ভেতর প্রবেশের দরজার কাছে সেগুলো রাখা ছিল।
রহস্যের কিনারা করতে না পেরে কিন্ডারগার্টেন কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা ছিল, নিশ্চয়ই কোনো চোর শিশুদের জুতা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। পরে নিরাপত্তা ক্যামেরায় ধরা পড়ে আসল চোর।
কিন্ডারগার্টেন কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ স্কুলে তিনটি নিরাপত্তা ক্যামেরা লাগিয়ে দেয়। ওই ক্যামেরায় ধরা পড়ে, একটি বেজি কামড়ে ধরে একটি ছোট্ট জুতা নিয়ে যাচ্ছে। জুতাচোর যে মানুষ নয়, তা দেখে দারুণ খুশি ওই অঞ্চলের উপ–পুলিশ প্রধান হিরোয়াকি ইনাদা।
স্বভাবগতভাবে বেজি মুখে করে নানা জিনিস নিয়ে যায় এবং সেগুলো লুকিয়ে রাখে। যাঁরা বেজি বাড়িতে পোষেন, তাঁরা এ জন্য ছোট ছোট খেলনা রাখেন, যেন বেজি সেগুলো লুকিয়ে রাখতে পারে।
জাপানের ওই কিন্ডারগার্টেনে প্রথম দিন বেজি সব জুতা এলোমেলো করে এবং ১৫টি জুতা নিয়ে যায়। পরদিন আরও ছয়টি জুতা খোয়া যায়। ১১ নভেম্বর সেটি ফিরে আসে এবং আরও একটি জুতা চুরি করে। এর পরের দিন পুলিশের ক্যামেরায় ‘চোর’ ধরা পড়ে।
তবে বেজিটি শুধু ঘরে পরার সাদা রঙের ক্যানভাস কাপড়ের তৈরি জুতা নিয়েছে। সেগুলো খুব হালকা। প্রাণীটি সহজেই সেগুলো কামড়ে ধরে নিয়ে যেতে পেরেছে।
কিন্ডারগার্টেনটির পরিচালক ইওশিহিদে সাইতো বলেন, ‘আমরা খুবই স্বস্তিবোধ করছি।’ শিশুরা জুতা চুরির ভিডিও দেখে খুব মজা পেয়েছে এবং হাসিতে ফেটে পড়েছে বলে জানান তিনি।
যে জুতাগুলো চুরি গেছে, সেগুলো হয়তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না। তবে এখন আর যাতে জুতা নিয়ে যেতে না পারে, সে ব্যবস্থা করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তারা জুতা রাখার জায়গাটি নেট দিয়ে ঘিরে দিয়েছে।