নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর শুরু

রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় যাওয়ার পথে পোখারা বিমানবন্দরের কাছে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। ইয়েতি এয়ারলাইনসের এ উড়োজাহাজে যাত্রী ছিলেন ৬৮ জন। চারজন ছিলেন ক্রু।
ছবি : রয়টার্স

নেপালের হাসপাতালের কর্মীরা গতকাল মঙ্গলবার থেকে শোকাহত পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর শুরু করেছেন। এর আগে গত রোববার নেপালে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় যাওয়ার পথে পোখারা বিমানবন্দরের কাছে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। ইয়েতি এয়ারলাইনসের এ উড়োজাহাজে যাত্রী ছিলেন ৬৮ জন। চারজন ছিলেন ক্রু। তিন দশকের মধ্যে নেপালের সবচেয়ে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা এটি।

উড়োজাহাজে থাকা ৬ শিশু, ১৫ বিদেশি নাগরিকসহ সবাই নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধারকারী দল জরুরি উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। নেপালের পুলিশ কর্মকর্তা এ কে ছেত্রী বলেন, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৭০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। এর আগে গত সোমবার পুলিশের আরেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, কাউকে জীবিত উদ্ধার করার আশা প্রায় শূন্য। তিনি বলেন, ‘সোমবার রাতে আমরা আরেকটি মৃতদেহ উদ্ধার করি। কিন্তু এটি তিন টুকরা ছিল। কিন্তু এটি তিনটি আলাদা মৃতদেহ নাকি একটি, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করার প্রয়োজন পড়বে।

অনুসন্ধানকাজে ড্রোন

পুলিশ কর্মকর্তা ছেত্রী বলেন, ‘আরও দুটি মৃতদেহের সন্ধানে উদ্ধারকর্মীরা কাজ শুরু করেছেন। এ কাজে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। দুর্ঘটনাস্থলের দুই কিলোমিটার এলাকায় অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।’

১০টির বেশি মৃতদেহ পোখারা হাসপাতাল থেকে সেনাবাহিনীর ট্রাকে করে বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে। এগুলো কাঠমান্ডুতে উড়োজাহাজে করে পাঠানো হবে। তিনটি মরদেহ পোখারায় তিন পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য মৃতদেহগুলো পর্যায়ক্রমে হস্তান্তর করা হবে।

বিস্ফোরণ

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ৪৪ বছর বয়সী অরুণ তামু বলেন, ‘আমি হাঁটছিলাম। হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণের মতো শব্দ শুনতে পাই।’ এখন পর্যন্ত এই উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার কারণ জানা যায়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে দেখা গেছে উড়োজাহাজটি পোখারা বিমানবন্দরের কাছাকাছি এসে দ্রুত বাঁ দিকে মোড় নিতে শুরু করে। এরপর বিস্ফোরণ ঘটে। ফ্রান্সের এআরটির তৈরি এই উড়োজাহাজটির ব্ল্যাক বক্স এখনো উদ্ধার করা যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার ফ্রান্সের বিশেষজ্ঞ দলের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার কথা।

নিহতদের পরিবারে শোকের ছায়া

উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত ২৩ বছর বয়সী সংগীতা শাহির চাচা রাজ ধুংগানা পোখারা হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে বলেন, পুরো পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি বলেন, সংগীতা কাঠমান্ডুর খুব মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি মেকআপ স্টুডিও চালাতেন। এই উড়োজাহাজের চালক ছিলেন অঞ্জু খাতিওয়াদা। এর আগে ২০০৬ সালে তাঁর স্বামীও বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন।