তিয়েনআনমেন বার্ষিকীতে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী ১০ নেতাকে আটক
হংকংয়ের বিরোধী দলের প্রধানসহ গণতন্ত্রপন্থী অন্তত ১০ নেতাকে গতকাল রোববার আটক করা হয়েছে। দিনটি ছিল তিয়েনআনমেন স্কয়ারে গণহত্যার ৩৪তম বার্ষিকী।
১৯৮৯ সালের ৪ জুন তিয়েনআনমেন স্কয়ারে গণতন্ত্রের দাবিতে জড়ো হয়েছিলেন ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। তাঁদের ওপর নির্বিচার গুলি চালায় চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকারের সেনাবাহিনী। এতে শত শত মানুষ প্রাণ হারান।
দিনটি স্মরণে হংকংয়ের কজওয়ে বে এলাকার একটি স্থানে জড়ো হন গণতন্ত্রপন্থীরা। গতকাল সেখান থেকেই আটক করা হয় দ্য লিগ অব সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস পার্টির প্রধান চ্যান পো-ইংকে। তিনি একটি মোমবাতি ও দুটি ফুল নিয়ে তিয়েনআনমেন স্কয়ারে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে গিয়েছিলেন।
এর আগে সকালের দিকে বিশিষ্ট গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকর্মী আলেক্সান্দ্রা ওংকে আটক করা হয়। ‘গ্রান্ডমা ওং’ নামে পরিচিত ৬৭ বছর বয়সী ওং তিয়েনআনমেন স্কয়ারে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঘর থেকে ফুল নিয়ে বেরিয়েছিলেন।
এ ছাড়া বিশিষ্ট সাংবাদিক মাক ইন-তিংকে কাস্টওয়ে বে থেকে আটক করা হয়। সব মিলিয়ে কমপক্ষে ১০ জনকে আটক করতে দেখেছেন এএফপির প্রতিবেদকেরা।
সরকারের দুর্নীতি বন্ধ ও গণতন্ত্রের দাবিতে ১৯৮৯ সালের এপ্রিল থেকে শিক্ষার্থীরা চীনের ঐতিহাসিক তিয়েনআনমেন স্কয়ারে অনশন শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন শ্রমিকেরা। ৩ জুন রাতে সেনা ও ট্যাংক নামায় সরকার। ৪ জুন মধ্যরাতে সবদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় তিয়েনআনমেন স্কয়ার। সেনাদের সামনে সার বেঁধে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা তিয়েনআনমেন স্কয়ার ত্যাগ করেন। তবে স্কয়ারের বাইরে নির্বিচার গুলিতে ততক্ষণে নিহত হন শত শত ছাত্র-শ্রমিক।
তিয়েনআনমেনের এই হত্যাযজ্ঞের কোনো পরিসংখ্যান এ পর্যন্ত প্রকাশ করেনি চীন। তবে প্রত্যক্ষদর্শী, মানবাধিকার সংস্থা ও গবেষকদের মতে, তিয়েনআনমেনে সেদিন হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল।
গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকর্মী ও মানবাধিকারকর্মীরা মনে করেন, তিয়েনআনমেনের ঘটনায় চীনের প্রতি ঘৃণা তৈরি হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, সি চিন পিং ২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে চীনে মতপ্রকাশ আরও সংকুচিত হয়ে পড়েছে।