বিচার চলার সময় আদালতের বাইরে পুলিশ ও গণতন্ত্রপন্থীদের স্বজনেরা অবস্থান নেন
বিচার চলার সময় আদালতের বাইরে পুলিশ ও গণতন্ত্রপন্থীদের স্বজনেরা অবস্থান নেন

হংকংয়ে ‘বেইজিংবিরোধী’ বিক্ষোভ করায় ১৪ গণতন্ত্রপন্থী দোষী সাব্যস্ত

বেইজিংয়ের আরোপ করা জাতীয় নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় হংকংয়ের ১৪ গণতন্ত্রপন্থী আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাদের তিন বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। আদালতে দুজন অভিযুক্ত নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার হংকংয়ের উচ্চ আদালত এ রায় দেন।

দোষী ব্যক্তিদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য লিয়ুং কুয়োক হুং, লাম চিউক টিং, হেলেনা উয়োং ও রেমন্ড চান রয়েছেন। দুজন সাবেক জেলা কাউন্সিলর লি ইয়ুয়ে-শুন ও লরেন্স লাউ নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন৷

২০২১ সালে ‘হংকং ৪৭’ নামে পরিচিত ৪৭ জন বিক্ষোভকারী ও অধিকারকর্মী জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় ‘বিদ্রোহের চক্রান্ত’বিষয়ক ধারায় অভিযুক্ত হন। এর মধ্যে ১৬ জন মামলা চলাকালে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আসছিলেন। বাকি ৩১ জন তুলনামূলক কম শাস্তির আশায় দোষ স্বীকার করেন।

বিচারক অ্যান্ড্রু চ্যান, অ্যালেক্স লি ও জনি চ্যান এক বিবৃতিতে নিজেদের রায়ের সারমর্ম তুলে ধরেন। সেখানে বলা হয়, ‘১৪ জন অভিযুক্তের লক্ষ্য ছিল একই সঙ্গে মুখ্য আধিকারিক ও সরকারের ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের পতন। যা তাদের মতে হংকংয়ে একটি সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করতে পারত।’

২০১৯ সালে বেইজিং জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালু করার চেষ্টা করলে হংকংয়ে ব্যাপক গণ–আন্দোলন শুরু হয়৷ গণতন্ত্রপন্থীদের মতে, এই আইন সেই সব স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে, যা ১৯৯৭ সালে ব্রিটিশ শাসনামল থেকে মুক্ত হওয়ার সময়ে নিশ্চিত করা হয়েছিল।

এরপরের বছর ২০২০ সালের জুলাই মাসে নির্বাচনের আগে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী বাছাইয়ের একটি প্রস্তাবকে ঘিরে বাড়তে থাকে টানাপোড়েন। সরকারপক্ষের মতে, এই প্রস্তাবের সাহায্যে সরকারকে ‘পঙ্গু’ করে দিতে চায় এই আন্দোলন৷ কিন্তু গণতন্ত্রপন্থীদের দাবি, এটি নির্বাচনে সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের সাধারণ প্রচেষ্টা ছিল।

এই মামলার দিকে তীক্ষ্ণ নজর রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের। এই মামলার রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে। তাই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের কূটনীতিকেরা শুনানির সময়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।