জাপানে জন্মহার কমছে। বিষয়টি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে দেশটির সরকারকে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা গত সোমবার দেশটির ক্রম হ্রাসমান জন্মহার মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, জাপানে জন্মহার বৃদ্ধির জন্য এখনই ব্যবস্থা নেওয়ার উপযুক্ত সময়। এখন ব্যবস্থা না নিলে দেরি হয়ে যাবে। তাই অপেক্ষা করার সময় নেই। ইতিমধ্যে জাপান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী জনসংখ্যার দেশ হয়ে গেছে।
কয়েক বছর ধরেই জন্মহার বাড়াতে জনগণকে নানা উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে জাপান সরকার। বেশি সন্তান নিয়ে নগদ অর্থসহ নানা সুবিধার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। তবে সমীক্ষা অনুযায়ী, শিশুর লালনপালনের ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশগুলোর একটি জাপান। এ কারণে অনেকেই সন্তান নিতে চান না।
জাপানের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত বছর দেশটিতে জন্মহার কমে যাওয়ার নতুন রেকর্ড হয়। গত বছর সরকারের প্রত্যাশার চেয়েও আট লাখ কম শিশুর জন্ম হয়েছে দেশটিতে। এর আগে ২০১৫ সালে দেশটিতে জন্মহার কমে যাওয়ার রেকর্ড হয়েছিল। দেশটিতে ভবিষ্যতে আরও জন্মহার কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, সেখানকার মানুষের গড় বয়স দাঁড়িয়েছে ৪৯। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক মানুষের বাস মোনাকোতে। এরপরই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী মানুষের দেশ জাপান।
ফুমিও কিশিদা জাপানের নতুন বছরে পার্লামেন্ট অধিবেশনের শুরুতে তাঁর সরকারের নীতি নিয়ে বক্তব্য দেন। তাতে তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতি সামাজিক ক্রিয়াকলাপ বজায় রাখতে পারে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। শিশুর জন্ম এবং পালনসংক্রান্ত নীতি এখনই নিতে হবে। এটি এমন একটি বিষয়, যার জন্য আর অপেক্ষা করা যায় না।’
কিশিদা বলেন, আগামী জুনের মধ্যে শিশু পালনবিষয়ক বাজেট দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা জমা দেবেন তিনি। এপ্রিলে সমস্যাটির তদারক করার জন্য একটি নতুন শিশু ও পরিবার সরকারি সংস্থা স্থাপন করা হবে।
জাপানের ইউওয়া পপুলেশন রিসার্চ অনুসারে, শিশু লালনপালনের ক্ষেত্রে জাপান বিশ্বের তৃতীয় ব্যয়বহুল দেশ। এর শীর্ষে আছে চীন। এরপর দক্ষিণ কোরিয়া। এ দুটি দেশেও জনসংখ্যা কমছে। বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে জনসংখ্যা কমে যাওয়ার ও বয়স্ক লোকজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহে চীন জানায়, গত বছর ৬০ বছরের মধ্যে তাদের জনসংখ্যা কমতে দেখা গেছে।