ভোট দেওয়ার পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অন্যতম প্রার্থী অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে।
ভোট দেওয়ার পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অন্যতম প্রার্থী অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে।

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

ভোট গ্রহণ শেষে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাতটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা।

ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে দেশটির নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, এবারের নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ছিল প্রায় ৭০ শতাংশ। এর আগে ২০১৯ সালের নির্বাচনে রেকর্ড ৮৩ দশমিক ৭২ শতাংশ ভোট পড়েছিল।

শ্রীলঙ্কার এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৩৯ জন। তবে ভোট গ্রহণ শেষে এখন আলোচনায় তিনজনের নাম শোনা যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে একজন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। একজন হলেন বিরোধী দল সঙ্গী জন বালাওয়াগার (এসজেবি) নেতা ও গুপ্তহত্যার শিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমাদাসার ছেলে সাজিথ প্রেমাদাসা। অন্যজন একসময় মার্ক্সবাদী হিসেবে পরিচিত ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টির নেতা অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই দুজনই বিক্রমাসিংহের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁদের যেকোনো একজনের কাছে হারতে পারেন বিক্রমাসিংহে।

চরম আর্থিক দুর্দশার প্রতিবাদে ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক জন–অসন্তোষ দেখা দেয়। আন্দোলনের এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ হাজারো জনতা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়লে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালান তিনি। এরপর পার্লামেন্টের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন বিক্রমাসিংহে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক কুশল পেরেরা এএফপিকে বলেন, এবারের লড়াই হবে ত্রিমুখী। তবে প্রধান তিন প্রার্থীর মধ্যে কে নির্বাচিত হবেন, তা বলা মুশকিল। কুশল পেরেরা বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে এবারের নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যে ৫০ শতাংশ ভোট প্রয়োজন, তা পাবেন না।’

আজ সন্ধ্যায় শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন জানায়, দেশব্যাপী ভোট গণনা শুরু হয়েছে। শনিবার রাতের মধ্যে ভোটের ফলাফল চলে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।

দেশটির আইন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো প্রার্থী যদি অর্ধেকের বেশি ভোট না পান, তাহলে অগ্রাধিকার ভোটের ওপর নির্ভর করে বিজয়ী প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে। শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে এর আগে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।