বিয়ে
বিয়ে

মৃত্যুর পর তাঁদের বিয়ে

চীনা বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ার একটি জুটি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন। কিছুদিনের মধ্যেই তাঁদের বিয়ে করার কথা ছিল। মৃত্যুর পর তাঁদের সম্মানে দুই পরিবারের সদস্যরা দুজনের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চীনে পাত্র বা পাত্রীর বা উভয়ের মৃত্যুর পর এ ধরনের বিয়ের আয়োজন ‘ঘোস্ট ম্যারেজ’ প্রথা হিসেবে পরিচিত।

মালয়েশিয়া ড্রাগন অ্যান্ড লায়ন ড্যান্স স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক রেফারি হিসেবে কাজ করতেন ইয়াং জিংশান (৩১)। তাঁর বান্ধবী ৩২ বছর বয়সী লি মালয়েশিয়ায় একটি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কাজ করতেন।

মালয়েশিয়ার চীনা ভাষার পত্রিকা চায়না প্রেস–এর এক খবরে বলা হয়, তিন বছর ধরে ইয়াং ও লির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই জুনেই ইয়াং তাঁর বান্ধবী লিকে থাইল্যান্ডে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। 

গত ২৪ মে মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় পেরাক এলাকায় এই জুটির প্রাইভেট কার উল্টে গেলে দুর্ঘটনায় দুজনই নিহত হন। 

দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যুর পর তাঁদের শোকার্ত পরিবারের সদস্যরা ঘোস্ট ম্যারেজ আয়োজনের পরিকল্পনা করেন। তাঁদের আশা, পরের জীবনে তাঁরা আবার স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একত্র হবেন। 

সিন চিউ ডেইলির খবরে বলা হয়, দুই পরিবারের সদস্যরা ইতিমধ্যে একই ফ্রেমে ইয়াং ও লির বিয়ের ছবি বানিয়ে নিয়েছেন।

ঐতিহ্যগতভাবে চীনের মানুষের বিশ্বাস, কোনো মানুষ যদি তাঁদের মনের ইচ্ছাপূরণের আগেই মারা যান, যেমন বিয়ে, তাঁরা পরের জীবনে শান্তি পান না। তাঁরা আবার পৃথিবীতে ফিরে আসতে ছটফট করেন।

চীনে সাধারণত দুই ধরনের ঘোস্ট ম্যারেজ দেখা যায়। একটি হচ্ছে, কোনো জুটি বাগদানের আগে বা পরে যদি মারা যান, তাহলে তাঁদের পরিবার বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবং তাঁদের একসঙ্গে সমাহিত করে। 

দ্বিতীয়টি হচ্ছে, জীবিত থাকা অবস্থায় দুই ব্যক্তির মধ্যে কোনো প্রেম বা বিয়ের চুক্তি ছিল না, কিন্তু মৃত্যুর পর কোনো ঘটকের মাধ্যমে দুজনের বিয়ের আয়োজন করা।

এই ঘোস্ট ম্যারেজ অনেকটা পাত্র-পাত্রী জীবিত অবস্থায় যেমন বিয়ে হয়, ঠিক তেমনই। দুই পক্ষ পাত্র-পাত্রীর পরিবারের খোঁজখবর নেয়। তারপর বিয়ের আয়োজন করে ও দুজনের মরদেহ তুলে এনে একই জায়গায় সমাহিত করা হয়।