আবারও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এর মধ্য দিয়ে তৃতীয় দফায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী হলেন কট্টর ডানপন্থী এ নেতা। খবর রয়টার্স ও আল–জাজিরার।
স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে নেতানিয়াহুর সরকার নিয়ে অনাস্থা ভোট হয়। এতে উতরে যান নেতানিয়াহু। ১২০ সদস্যের নেসেটে তাঁর নতুন সরকারের পক্ষে ভোট দেন ৬৩ জন। বিপক্ষে ভোট পড়ে ৫৪টি।
নেসেটে অনাস্থা ভোটে জয়ের পরপরই ইসরায়েলের নবম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন নেতানিয়াহু। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে এবং পরবর্তীতে ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় মেয়াদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পরই নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে নতুন করে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তবে নেসেটে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, এবারের মেয়াদে ‘আরব–ইসরাইল সংঘাত’ বন্ধ করা তাঁর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হবে। সেই সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পথ রুদ্ধ করতে কাজ করবেন তিনি। ইসরায়েলের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোও অগ্রাধিকার তালিকায় থাকবে বলে জানান নেতানিয়াহু।
উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নেতানিয়াহুর দল লিকুদ পার্টি জয় পায়। টানা ১২ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকার পর গত বছর নির্বাচনে হেরে যান নেতানিয়াহু। গত বছরের জুনে নেসেটে (পার্লামেন্ট) নতুন জোট সরকার গঠন নিয়ে বিতর্কের পর ভোট হয়। নতুন জোট সরকারের পক্ষে পড়ে ৬০ ভোট। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পক্ষে পড়ে ৫৯ ভোট।
রে ইয়ার লাপিদের মধ্যপন্থী দল ইয়েস আতিদের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করে ইয়েমিনা পার্টি। কিন্তু সম্প্রতি দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট ও ইয়ার লাপিদের জোটে ফাটল দেখা দেয়। তাই গত নভেম্বরে নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। এ নির্বাচনে নেতানিয়াহুর জয়ের পর থেকেই পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাদের সহিংসতা ও ফিলিস্তিনি হত্যা বেড়েই চলেছে।
এদিকে গতকাল বুধবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ বলেছেন, ইসরায়েল আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে। ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর ক্যাডেটদের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘দুই বা তিন বছরের মধ্যে আপনি পূর্ব দিকের আকাশ অতিক্রম করে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় হামলা চালানোর অভিযানে অংশ নিতে পারেন।’
পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে তেহরানের সঙ্গে ‘বিশ্বশক্তির’ কূটনীতিকে শেষ পরিণতি বলে মনে করে ইসরায়েল। এ জন্য এক দশক ধরে ‘চিরশত্রু’ ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করার এমন প্রকাশ্য হুমকি দিয়ে আসছে দেশটি।