রাষ্ট্রীয় উপহার (তোশাখানা) বেচাকেনার মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে দেওয়া ১৪ বছরের কারাদণ্ড স্থগিত করেছেন দেশটির ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। আজ সোমবার এই আদেশ দেশ দেন আদালত।
সাধারণ নির্বাচনের কয়েক দিন আগে গত ৩১ জানুয়ারি ইসলামাবাদের জবাবদিহি আদালত এই দুজনকে এ সাজা দেন। পরদিনই নিয়মবহির্ভূতভাবে বিয়ে (বুশরার ইদ্দত পূর্ণ না হওয়া) করার এক মামলায় প্রত্যেককে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেন আরেকটি আদালত।
এর আগে ৩০ জানুয়ারি কূটনৈতিক তারবার্তা (সাইফার) ফাঁসের মামলায় রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনের অধীন গঠিত বিশেষ আদালত ইমরান খান ও তাঁর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
গত বছরের ডিসেম্বরে জবাবদিহি আদালতে তোশাখানা মামলাটি করেছিল জাতীয় জবাবদিহি ব্যুরো (এনএবি)। এতে সৌদি যুবরাজের উপহার দেওয়া দুটি অলংকার কম দাম দেখিয়ে তোশাখানা থেকে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল ইমরান ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
পরের মাসে ইসলামাবাদের জবাবদিহি কোর্ট দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা এনএবি অভিযোগ করেছিল, ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তিনি ও তাঁর স্ত্রী বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও বিদেশি প্রতিনিধির কাছ থেকে সব মিলিয়ে ১০৮টি উপহার গ্রহণ করেছেন।
রায়ে ১৪ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ইমরান ও তাঁর স্ত্রীকে ১০ বছরের জন্য সরকারি দায়িত্ব পালনে নিষিদ্ধ করা হয় এবং প্রত্যেককে ৭৮ কোটি ৭০ লাখ পাকিস্তানি রুপি অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় ইমরান খানকে আদালতে হাজির করা হলেও তাঁর স্ত্রী অনুপস্থিত ছিলেন। অবশ্য পরে তিনি আত্মসমর্পণ করেন।
রায় ঘোষণার পর ইমরান খানকে আদিয়ালা জেলে রাখা হলেও বুশরাকে ওই কারাগারে না রেখে বানিগালার বাসভবনে স্থানান্তর করা হয়। ইমরান-বুশরা দম্পতির এ বাড়িকে সাব-জেল ঘোষণা করা হয়েছে।
২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান খান। ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনীতিতে আসা ইমরান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়। বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারে সাজা ভোগ করছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।